28/04/2024 : 5:22 AM
আমার বাংলাদক্ষিণ বঙ্গপূর্ব বর্ধমান

কর্তব্যে অবিচল দুর্ঘটনায় আহত প্রধান শিক্ষক

জিরো পয়েন্ট নিউজ – জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী, গুসকরা, ২৬ এপ্রিল ২০২২:


মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগের ঘটনা। অন্যতম প্রধান পরীক্ষক তথা পূর্ব বর্ধমানের রথতলা মনোহর দাস বিদ্যানিকেতনের প্রধান শিক্ষক বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় গত ২৬ শে এপ্রিল জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের কার্যালয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষার খাতা জমা দিয়ে এবং বিদ্যালয় সংক্রান্ত আনুষঙ্গিক কিছু কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথে সন্ধ্যা ছ’টা নাগাদ গোলাপবাগ মোড়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন।

স্হানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে রাস্তার বাম দিক দিয়ে মোটামুটি ধীরগতিতেই আসছিলেন বিনায়ক বাবু। হঠাৎ আড়াআড়ি ভাবে একটি গাড়ি তার সামনে চলে আসে। তিনি সঙ্গে সঙ্গে ব্রেক চেপে নিজের গাড়ি থামিয়ে দিলেও ভারসাম্য বজায় রাখতে না পেরে গাড়ি থেকে ছিটকে পড়েন। মাথায় হেলমেট থাকার জন্য বড় বিপদের হাত থেকে তিনি বেঁচে গেলেও তার ডান পায়ে ও কাঁধে বড় ধরনের চোট লাগে। স্হানীয় এক নার্সিং হোমে নিয়ে যাওয়া হলে এক্সরে করে দ্যাখা যায় তার ডান কাঁধের হাড় ভেঙেছে। অপারেশনের প্রয়োজন না হলেও কর্তব্য রত চিকিৎসক তার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করেন এবং তাকে দিন পনেরো বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দ্যান। চিকিৎসকের নিষেধ সত্ত্বেও দুর্ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পরেই নিজ কর্তব্যে অবিচল থাকলেন তিনি।

বিনায়ক বাবু বর্ধমান পশ্চিম পরীক্ষা কেন্দ্রের, সেণ্টার কোড ২০৩৭, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক। একাধিক বিদ্যালয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব তার উপর আছে। দুর্ঘটনায় আহত হওয়া সত্ত্বেও ছাত্র তথা সহকর্মী দরদী এই শিক্ষক নিজ কর্তব্যে অবিচল থেকেছেন। একাধিক বিদ্যালয়ে পৌঁছে দিয়েছেন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র। প্রসঙ্গত মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় বিনায়ক বাবু নিজ বিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্রের বাড়িতে গিয়ে তাদের হাতে এ‍্যাডমিট কার্ড তুলে দিয়েছেন । বিভিন্ন সময়ে মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়া পরীক্ষার্থীদের পাশে থেকে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থাও করেছেন।

বিনায়ক বাবুর দুর্ঘটনার খবর শুনে চমকে ওঠেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তার জনৈক সহকর্মী। তিনি বললেন – বর্তমান যুগে তার মত একইসঙ্গে ছাত্র ও সহকর্মী দরদী প্রধান শিক্ষক কার্যত বিরল। আমরা যারা কাছ থেকে তাকে দেখেছি ভাল করেই জানি তিনি তার কর্তব্যে অবিচল থাকবেন। তার দ্রুত সুস্থতা কামনা করি।

অন্যদিকে বিনায়ক বাবু বললেন- চলার পথে দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে। মাথায় হেলমেট থাকার জন্য হয়তো আরও বড় বিপদের হাত থেকে বেঁচে গেছি। প্রত্যেককে অনুরোধ করব গাড়ি চালানর সময় অবশ্যই হেলমেট ব্যবহার করবেন। তিনি আরও বললেন- প্রশ্ন পাঠানোর জন্য বিকল্প ব্যবস্থা অবশ্যই হতে পারত। যেহেতু উঠে দাঁড়াতে পারছি তাই জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শককে বিব্রত না করে আমার উপর ন্যস্ত দায়িত্ব পালন করলাম।

Related posts

কৃষকরা নিজের ইচ্ছা মতন নাড়া পুড়িয়ে যাচ্ছে কালনায়

E Zero Point

কিছুটা কমলো দৈনিক সংক্রমন বর্ধমানে, আজ ৩৪২

E Zero Point

মৃণাল সেনের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন হবে মেমারিতে

E Zero Point

মতামত দিন