24/04/2024 : 11:17 AM
আমার বাংলাদক্ষিণ বঙ্গপূর্ব বর্ধমানমেমারি

মেমারিতে ১০ লাখ টাকার জমির জন্য ২ লাখ টাকা!!! গ্যাস কোম্পানী থেকে ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না চাষীরা, অভিযোগ

জিরো পয়েন্ট নিউজ ডেস্ক, এম.কে হিমু, মেমারি,  ২০ ডিসেম্বর ২০২২:


রাজ্যে পাইপ লাইন বসানোর জন্য জমি অধিগ্রহণ করছে গেইল ইণ্ডিয়া লিমিটেড।  পূর্ব বর্ধমান জেলা বিভিন্ন এলাকা দিয়ে এই পাইপ লাইনের কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। মেমারিতেও একদিকে যেমন পাইপলাইনের কাজ শুরু হয়েছে, অন্যদিকে চলছে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া। কিছু চাষী জমির মূল্য নিয়ে খুশি হলেও মেমারি শহর নিকটস্থ তালপাতা গ্রামের কিস্ককিন্দা মৌজা ও মেমারি মৌজার চাষীরা গ্যাস কোম্পানী থেকে ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না বলে অভিযোগ করছেন চাষীরা। তাদের দাবী ১০ লাখ টাকার জমির জন্য ২ লাখ টাকারও কম পাচ্ছেন তারা। এছাড়াও তারা মনে করেন পাইপ লাইনের ফলে ভবিষ্যতে জমিগুলো চাষযোগ্য থাকবে না।

সোমবার পূর্ব বর্ধমান জেলার মেমারি শহরের শেষ প্রান্তে দুর্গডাঙ্গার মোড়ে প্রায় শতাধিক চাষী একটি বিক্ষোভ সভার আয়োজন করেন। সভায় চাষীদের স্বার্থে উপস্থিত ছিলেন মেমারি পৌরসভার উপ-পৌরপ্রধান সুপ্রিয় সামন্ত। তিনি উপস্থিত চাষীদের আশ্বাস দেন যে কোম্পানীর লোকেদর সাথে প্রশাসনের আলোচনার সময় বিষয়টি উত্থাপন করবেন।

বিক্ষোভ সভার পর চাষীরা তাদের ভবিষ্যত প্রজন্মদের সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন পোষ্টার ও জাতীয় পতাকা নিয়ে একটি মিছিল হাসপাতাল মোড়, বামুনপাড়া মোড় হয়ে মেমারি বিডিও অফিস প্রাঙ্গনে পৌঁছায়। মেমারি ১ ব্লক সমষ্টি উন্নয়ণ আধিকারি ড. আলি মহম্মদ ওয়ালিউল্লাহের কাছে জমির সঠিক ও ন্যায্য মূল্য পাওয়ার জন্য চাষীদের প্রতিনিধিরা ডেপুটেশন দেয়।

এ প্রসঙ্গে মেমারি ১ ব্লক সমষ্টি উন্নয়ণ আধিকারি ড. আলি মহম্মদ ওয়ালিউল্লাহ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, সরকারী আইন অনুসারে যে মূল্য হয় চাষীরা অবশ্যই সেই মূল্য পাবে। কিন্তু চাষীরা যদি অতিরিক্ত মূল্য চায় তাহলে ২০১৬ থেকে ২০২৯ সাল পর্যন্ত তাদের সর্বোচ্চ ডীড জমা দিলে প্রশাসন সেই ব্যপারটি ভেবে দেখবে।

চাষীদের প্রতিনিধি এরশাদ আলি মল্লিক জানান, কিসকিন্দা ও মেমারি মৌজাতে যে সব চাষীদের কমবেশি জমি আছে। সেই জমিতে চাষ করেই তারা জীবিকা নির্বাহ করে। গেইল কোম্পানী তাদের পাইপ লাইন নিয়ে যাওয়ার জন্য এই কিসকিন্দা ও মেমারি মৌজার কিছু জমি পূর্ণ ও আংশিক চিহ্নিত করেছে তাদের সাথে আলোচনা না করেই।

এছাড়াও তারা যে ক্ষতিপূরণ মূল্য দিচ্ছে তা বাজারমূল্য থেকে অনেক কম। এই মৌজার জমিগুলি শহর সংলগ্ন হওয়ায় আশেপাশের জমিগুলি ভিটেতে পরিণত হচ্ছে ফলে ভবিষ্যতে এর মূল্য যেমন একদিকে অনেক বাড়বে ঠিক তেমনই জমিগুলোতে আর চাষ করা যাবে না।

এক চাষী সেখ আসরাফুল বলেন, গেইল কোম্পানী গ্যাসের পাইপ লাইনের জন্য জমির ক্ষতি করছে ১০০ শতাংশ ও ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে ২২ শতাংশ। আর যে মূল্য ধার্য করছেন সেটা পাঁচ বছর আগের বাজার মূল্য। কোম্পানীর শর্তানুসারে এই সব জমিগুলিতে ভবিষ্যতে কোন কনস্ট্রাকশন করা যাবে না। ফলে জমির ভ্যালুয়েশন কমে যাবে। চাষীরা সকলে মানসিক ও অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত।

যে কোন রাজ্যের উন্নয়ণের ভিত্তি অন্নদাতার জমিতে দাঁড়িয়ে থাকে। আর সেই অন্নদাতারায় যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তার দায়ভার কে নেবে সেই প্রশ্ন রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের কাছে করছে অন্নদাতাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম।

 

Related posts

মেমারি রেল ষ্টেশনে হকারস ইউনিয়নের শহীদ স্মরণ

E Zero Point

মেমারি হাটপুকুরে বাইক দুর্ঘটনায় মৃত্যু ১ আহত ২

E Zero Point

মন্তেশ্বরের শিক্ষিত বেকারদের কাজ চায়ঃ অনুপম ঘোষ

E Zero Point

মতামত দিন