জিরো পয়েন্ট নিউজ – সত্যনারায়ন সিকদার ও এম. কে. হিমু, মেমারি, ১৯ মার্চ ২০২৩:
শ্রমজীবি মেহনতী মানুষের মুখপত্র গণশক্তিকে নিজের ৮০ বছরের জীবনে পাথেয় করে রোজ সকালে নিয়মকরে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ায় তার একমাত্র লক্ষ্য। শংকর কর্মকার। নামের আগে “কমরেড” আজও লেখেন । কারণ তিনি আজীবন কমিউনিস্ট পার্টির পূর্ণ সময়ের কর্মী হিসেবে নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন অনেক বছর আগেই।
বর্তমানে শংকর বাবুর বয়স ৮০ ছুঁয়েছে, বয়সের ঘরে কুজো হয়ে হাঁটেন, এই বয়সে এসেও কোন কিছুই বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি তার কাছে । আজও পার্টিকে ভালোবেসে নিয়ম করে প্রত্যেকদিন সকালবেলা নিজের হাতে আঠা তৈরি করে পূর্ব বর্ধমান জেলার স্টেশনে একটি গণশক্তি পত্রিকা লাগিয়ে যান, ট্রেন ধরতে আসার যাত্রীদের পড়ার জন্য ।
অনেকেই হয়তো চোখ বোলান, আবার অনেকে চোখ ঘুরিয়ে ট্রেনে উঠে পড়েন, তবে শংকরবাবুর এ ব্যাপারে কোন মাথা ব্যাথা নেই।
হাওড়া বর্ধমান মেন লাইনে দেবীপুর স্টেশনে এলে দেখতে পাবেন শংকরবাবুর লাগিয়ে যাওয়া “গণশক্তি পত্রিকা” ।
শংকরবাবুর বাড়ি মেমারি থানার দেবীপুর অঞ্চলের আমোদপুর গ্রামে। দেবীপুর স্টেশন থেকে তিন চার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে দীর্ঘ ২৫ বছর এক দিনও ছুটি না নিয়ে নিয়ম করে পত্রিকায় লাগিয়ে যান।
জানা যায় দীর্ঘদিন তাদের সরকার ক্ষমতায় থাকার পর সরকারের পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু শংকর বাবু নিয়মের পরিবর্তন হয়নি । একটা সময় অনেক বাম নেতা কর্মীরা যখন নতুন সরকারের গা ভাসিয়েছে সেই সময় ।বামফ্রন্টের এই দুর্দিনে তিনি ছেড়ে যাননি আজও নিয়ম করে পার্টি অফিসের তালা খুলে বসেন ।
শংকর বাবু মনে করেন ,”মানুষের জন্য লেখা, মানুষের কাছে না পৌঁছলে একটা মূল্যহীন হয়ে পড়ে”। তাই জীবনের শেষ মুহূর্তেও হাতে গণশক্তি নিয়ে আর শরীরে লাল পতাকা রেখে চির বিদায় নিতে চান কমরেড শংকর কর্মকার।
এরকম অনেক শংকর বাবু আজও রাজ্যের বিভিন্ন রেলওয়ে স্টেশন থেকে শুরু করে বাসষ্ট্যান্ড, পাড়ার মোড়ে, চায়ের দোকানের পাশে নিজের পার্টির প্রতি নিবেদিত প্রাণ হয়ে জন-গণ(এর)শক্তি কে জীবনীশক্তিতে পরিণত করে পার্টির মুখপত্রের প্রচার করে চলেছেন নিঃস্বার্থভাবে।