জিরো পয়েন্ট নিউজ, মেমারি, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ :
জলের অপর নাম জীবন। আর সেই জীবন আটকে গেল স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলে। অবশ্য প্রকাশ্যে কোন তৃণমূল নেতারা স্বীকার করেন না সে কথা। কিন্তু জীবনের প্রাণ ভ্রমরা যে মানুষ নামক কাঠামোতে থাকে তারা সব বোঝে। সেরকমই এক ঘটনার সাক্ষী মেমারির গোপ গন্তারের বাহাবপুর গ্রামের মানুষ।
সোমবার ১৯ ফেব্রুয়ারি পূর্ব বর্ধমান জেলার মেমারি ১ ব্লক অফিসে গোপগন্তার ১ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের বাহাবপুর গ্রামের বাসিন্দারা খাবার জলের দাবীতে ডেপুটেশন তুলে দেন বিডিও শতরূপা দাসের হাতে। ডেপুটেশন দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন গোপগন্তার-১ পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য রূপালী চট্টোপাধ্যায়, মেমারি ১ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য অর্ক ব্যানার্জী, মেমারি ১ পঞ্চায়েত সমিতি প্রাক্তণ সহ সভাপতি সেখ মোয়াজ্জেম সহ গ্রামবাসীরা।
জানা যায় গত গত ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে বাহাবপুরে একটি পিএইচই পাম্প বসানোর জন্য বোরিং এর কাজ শুরু হয় এবং প্রা.য় ১০০ ফুট পাইপ নেমে যায় তারপর গোপগন্তার ১ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধান ও স্থানীয় তৃঁণমূল নেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এবং মেমারি থানার আধিকারিকের উপস্থিতিতে পিএইচই পাম্প বসানোর কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। পিএইচই পাম্প বসানোর জন্য জমি দাতা রেনুকা চট্টোপাধ্যায়, সাধন চট্টোপাধ্যায়, বোধন চট্টোপাধ্যায় ও মদন চট্টোপাধ্যায় ডেপুটেশনে জানান পাম্পটা হলে বাহাবপুর ও আন্দুর গ্রামের ৩৫০০ মানুষ জলকষ্ট থেকে মুক্তি পেত কিন্ত এক ভুয়ো চাষীর অবজেকশনে পাম্পের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে।
জানা যায় গ্রামবাসীরা এ ব্যপারে গোপগন্তার-১ পঞ্চায়েত ঘেরাও করেন, এসডিও, ডিম, পিএইচ দপ্তরে বিষয়টি জানিয়েছেন কিন্তু প্রায় দুমাস হতে চললো কোনও সমাধান হয়নি। এদিন জিরো পয়েন্টের সাংবাদিকের মুখোমুখি হয়ে বিডিও শতরূপা দাস জানান, পিএইচই দপ্তর থেকে জানতে পারি বোরিং এর কাজ চলাকালীন স্থানীয় কিছু মানুষের আপত্তি থাকায় কাজটি সাময়িক স্থগিত রাখা হয়েছিল যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। কিন্তু এটা জল জীবন মিশনের প্রোজেক্ট এটা খুব তাড়াতাড়ি সম্পূর্ণ করতে হবে। মানুষ জলকষ্টে আছে, জলের মতো সমস্যা সমাধানে প্রশাসনিক সদা তৎপড়। তবে জায়গা নিয়ে যে সমস্যা সেটা পিএইচই, বিএলআরও দপ্তরের সাহায্য নিয়ে থ্রীম্যান কমিটি গঠন করা হয়েছে আইনমত সবকিছু হবে। আর সামনে গ্রীষ্মকাল আসছে, মানুষ জলকষ্টে থাকবে, আশা করি তার আগেই সমস্যার দ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করা হবে।
যদিও বিশেষ সূত্রে জানা যাচ্ছে যে গোপগন্তারের বাহাবপুরে এই জলপ্রকল্পের জায়গা নিয়েই বিতর্ক। তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েতের বিগত বোর্ডেই এই জায়গা স্থির করা হয়। তৃণমূল কংগ্রেসের নতুন বোর্ডে এই জায়গা নিয়ে আপত্তির মূল কারণ পাম্প বসানোর জায়াগাটি মূল রাস্তা থেরে ভিতরের দিকে, ফলে ভবিষ্যতে পাম্পের কোন যন্ত্র বিকল হলে তা সাড়ানোর জন্য যাওয়ার রাস্তা থাকবে না। কিন্ত এলাকার সিপিআইএম নেতা তথা মেমারি ১ পূর্ব এরিয়া কমিটির সম্পাদক সঞ্জয় গুঁই বলেন তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের ফলে পাম্পের কাজ বন্ধ হয়ে গেল। যে জায়গায় পাম্প বসানোর কাজ শুরু হয়েছিল সেটা স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যেরই আর যারা আটকাচ্ছে এই জলপ্রকল্পটি তারাও তৃণমূলের। তাদের দ্বন্দ্বের ফলে সাধারণ মানুষ জলকষ্টে ভুগছে।