04/05/2024 : 4:56 AM
ই-জিরো পয়েন্টইভেন্ট

ইভেন্টঃ অংশগ্রহণ করুন পরশপাথরের অনলাইন সাহিত্য সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা

জিরো পয়েন্ট নিউজ ডেস্ক, মেমারি, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ :


পূর্ব বর্ধমান জেলার মেমারির স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পরশপাথর একদিকে যেমন বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচী করে থাকে ঠিক তেমনই সাহিত্য-সংস্কৃতমনোস্কদের জন্য আয়োজন করে বিবিধ কর্মসূচী। পরশপাথরের পক্ষ থেকে শুরু হয়েছে অনলাইন সাহিত্য সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা। অংশগ্রহণ করতে হলে তার বিস্তারিত বিবরণ নীচে দেওয়া হলো।

জানুয়ারীর বিদায় পর্বে যখন ফেব্রুয়ারীর আগমন হয় তখনই মনে পড়ে যায়, ভাষা শহীদদের রক্তে রঞ্জিত অমর একুশের কথা। বাংলা ভাষার বেদিতে রক্তাক্ত একুশে শহীদের সমাধি। আর এই ফেব্রুয়ারীর স্মৃতিচারণায় প্রতিবছরের মত এবারও আমরা আয়োজন করছি একটি অনলাইন সাহিত্য_সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা। থাকছে-
১. স্বরচিত কবিতা লিখন প্রতিযোগিতা
২. আবৃত্তি প্রতিযোগিতা
৩. বিষয়ভিত্তিক বক্তৃতা প্রতিযোগিতা
৪. সঙ্গীত প্রতিযোগিতা
নিয়মাবলী:-
✒️১. স্বরচিত কবিতার ক্ষেত্রে লাইন সংখ্যা হবে সর্বোচ্চ ২৪ লাইন।
২. স্বরচিত কবিতার বিষয়– ‘বাংলা ভাষায় রঞ্জিত একুশে।’ এই বিষয়ের ওপর কবিতা লিখতে হবে। বিষয় ভিন্ন কোনো লেখা গ্ৰহনযোগ্য নয়।
৩. আমাদের সমাজ, ধর্ম, রাজনীতিকে আঘাত প্রদর্শিত কোনো লেখা বিবেচ্য হবে না।
🎤৪. আবৃত্তির ক্ষেত্রে অংশগ্রহণকারীকে বয়স অনুযায়ী নিম্নলিখিত বিভাগে অংশগ্রহণ করতে হবে–
★”ক” বিভাগ– (অনূর্ধ্ব–৯ বছর)
কবিতা– বাংলিশ(অপূর্ব গোস্বামী)
★ “খ” বিভাগ–( ৯বছর ১দিন–১৪বছর)
কবিতা– স্বাধীনতা তুমি (শামসুর রহমান)
★ “গ” বিভাগ–(১৪বছর ১দিন– ১৮ বছর)
কবিতা– বাতাসে লাশের গন্ধ(রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ)
৫. এই তিনটি বিভাগের কবিতার মডেল কপি পোস্টের শেষে দেওয়া রয়েছে। সেই অনুযায়ী আবৃত্তি মুখস্থ করে পরিবেশন করলেই হবে।
৬. কোনো প্রকার এডিটেড ভিডিও পোস্ট করা যাবে না। আমরা শুধু খাঁটি ভিডিওটাই নেবো। অবশ্যই পাঠ যেন দেখে দেখে না হয়। সম্পূর্ণভাবে মুখস্থ করে তা আবৃত্তি করতে হবে।
📢৭. বক্তৃতা প্রতিযোগিতার বিষয় হল– “বাংলা ভাষার উত্তরনের পন্থা।”
★ বক্তৃতার সময়– সর্বোচ্চ ৫মিনিট
★ বিভাগ– সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত
৮. বক্তব্য পরিবেশনের ক্ষেত্রেও কোনো প্রকার এডিটিং বা ব্যাকগ্ৰাউন্ড মিউজিক ইত্যাদির প্রয়োজন নেই। মূল বিষয়ের ওপর একটি নির্ভুল ও গোছানো বক্তব্য একমাত্র কাম্য এবং গ্ৰহনযোগ্য।
🎧৯. সঙ্গীতের ক্ষেত্রে বয়স অনুযায়ী রয়েছে নিম্নোক্ত তিনটি বিভাগ–
★ “ক” বিভাগ– (অনূর্ধ্ব–৯ বছর)
গান– বাংলার মাটি বাংলার জল
★ “খ” বিভাগ- (৯বছর ১ দিন- ১৪ বছর)
গান- আবার আসিব ফিরে
★ “গ” বিভাগ- (১৪বছর ১দিন- ১৮ বছর)
গান- আমি বাংলায় গান গাই
১০. সঙ্গীতের ক্ষেত্রে বাদ্যযন্ত্রের কোনো বিধিনিষেধ নেই। প্রতিযোগী স্ব স্ব পছন্দ অনুযায়ী তা ব্যবহার করতে পারেন। তবে কোনভাবেই ট্র্যাক মিউজিক ব্যবহার করা যাবে না।
১১. এই চারটি বিভাগ পোস্টের সময় ট্যাগ ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক। ট্যাগ ব্যতীত কোনো পোস্ট গ্ৰহনযোগ্য নয়।
এইভাবে যেটা যে গ্ৰুপের সেই ট্যাগ অনুসারে পোস্ট করতে হবে।
১২. উপরিউক্ত নিয়ম মেনে মোট দুটি উপায়ে প্রতিযোগিতার জন্য পোস্ট করতে হবে।
★ ★★ প্রথমে ফেসবুকে ‘আমরা পরশপাথর’ নামক গ্ৰুপে জয়েন করে সেখানে নিজ সৃষ্টি পোস্ট করতে হবে। তারপর সেই পোস্টটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্ৰুপে জয়েন করে তা আবার পোস্ট করতে হবে। দুই জায়গা নিয়মাবলী অনুযায়ী ট্যাগ মেইনটেইন করা একান্ত আবশ্যক। নিম্নে গ্ৰুপ অনুযায়ী হোয়াটসঅ্যাপ লিঙ্ক দেওয়া রয়েছে। তা ক্লিক করে জয়েন হতে হবে।
স্বরচিত কবিতা লিখন প্রতিযোগিতা’র গ্ৰুপ
আবৃত্তি প্রতিযোগিতা’র গ্ৰুপ
বক্তৃতা পাঠ প্রতিযোগিতা’র গ্ৰুপ
সঙ্গীত প্রতিযোগিতা’র গ্ৰুপ
১৩. অ্যাডমিন কতৃর্ক পোস্ট অ্যাপ্রুভ হয়ে যাওয়ার পর সেই পোস্টটি নিজের ওয়াল থেকে শেয়ার করতে হবে। আগে পোস্ট অ্যাপ্রুভ হবে তারপর নিজের ওয়াল থেকে শেয়ার করতে হবে। এটি বাধ্যতামূলক। আমরা অবশ্যই প্রোফাইল ভিজিট করবো।
১৪. প্রতিযোগিতা শুরু হচ্ছে ২১শে ফেব্রুয়ারি থেকে। চলবে ২১ দিন। অর্থাৎ প্রতিযোগিতার সময়সীমা- ২১শে ফেব্রুয়ারী থেকে ১২ই মার্চ রাত্রি ১২টা পর্যন্ত।
১৫. আবৃত্তি এবং সঙ্গীত এই দুটি গ্ৰুপের ক্ষেত্রে বয়সের একটি প্রমাণপত্র নিজ নিজ বিভাগ অনুযায়ী ঐ উপরিউক্ত হোয়াটসঅ্যাপ গ্ৰুপে পাঠাতে হবে।এক্ষেত্রে কোনো প্রুফ ফেসবুকে পোস্ট করার প্রয়োজন নেই।
🏆পুরষ্কার🏆
🏅চারটি গ্ৰুপের প্রতিটি বিভাগ থেকে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় প্রতিযোগীর জন্য উপহার স্বরূপ থাকবে সার্টিফিকেট, মেমেন্টো ইত্যাদি। ভারত বহির্ভূত অন্যান্য দেশ থেকে অংশগ্রহণকারী প্রতিযোগীদেরও স্বাগত। তাদের ক্ষেত্রে সার্টিফিকেট সফ্ট কপি’র মাধ্যমে পাঠানো হবে।
🏅তাছাড়াও সর্বোচ্চ লাইক, কমেন্ট এবং শেয়ারকারী’র জন্য মোট চারটি বিভাগ থেকে বিশেষ পুরস্কার থাকবে।
🎉প্রতিবছরের মতো অদ্য বছরেও আমরা অফলাইনে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পুরষ্কার বিতরণী সভার আয়োজন করবো। নির্দিষ্ট তারিখ হোয়াটসঅ্যাপ এবং ফেসবুক দুই মাধ্যমেই জানিয়ে দেওয়া হবে।
সমস্ত নিয়মাবলী পড়ার পর যদি কোনো জিজ্ঞাসা থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট সেকশনে কমেন্ট করতে পারেন।আশা রাখবো সকলে পোস্টটিকে ছড়িয়ে দিয়ে প্রতিযোগিতাটি বৃহৎ পরিসরে যাতে বিস্তৃত হয় সেই বিষয়ে দৃষ্টিযুক্ত করবেন। এটা কোনো শর্ত নয়। মানবিকতার বন্ধনকে সুদৃঢ় করতে এ এক আবদার।
সমস্ত প্রতিযোগীদের জন্য আগাম শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন। সকলের অংশগ্রহণে অমর একুশে ফেব্রুয়ারী সজীব হয়ে উঠুক।
🌼🌼🌼আবৃত্তির সফ্ট কপি/ পুঁথি 🌼🌼🌼
১. বাংলিশ (‘ক’ বিভাগ)
© অপূর্ব গোস্বামী
মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে
রামু মুৎসুদ্দি।
বাংলা লেখে ইংলিশেতে
ফ্যানটাস্টিং বুদ্ধি ।।
অক্ষর গুলো ক্যাবলা মতো
বাংলা বর্ণমালায়।
ইংলিশে নেই ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে
হাত বোলানোর বালাই।।
ইংলিশ লেটার স্মার্ট অ্যান্ড ফাইন
দারুণ হ্যান্ডসাম।
ঋ এর ওই প্যাঁচ ঘোরাতেই
ঝরে রামুর ঘাম ।।
ঙ, ঞ অনুস্বার
ফালতু যতস্সব।
ঘ্যাঙাসুরের দেশে যেন
নাকি সুরোৎসব ।।
বিদঘুটে সব বাংলা বানান
উচ্চারণে দাঁত ভাঙে।
বাংলা পড়া ইংলিশেতে
রামুর দিল মোর মাঙ্গে ।।
কুজ্ঝটিকা করতে বানান
রামুর যায় একবেলা।
মারছে যেন দশটা ভুতে
দাঁতপাটিতে শ ঢ্যালা ।।
বুদ্ধি করে ফন্দি আঁটে
লিখবে রামু বাংলিশে।
অ্যানুয়েলের পরীক্ষাতে
বাংলা বানান ইংলিশে ।।
২. স্বাধীনতা তুমি( ‘খ’ বিভাগ)
– শামসুর রহমান
স্বাধীনতা তুমি
রবিঠাকুরের অজর কবিতা, অবিনাশী গান।
স্বাধীনতা তুমি
কাজী নজরুল ঝাঁকড়া চুলের বাবরি দোলানো
মহান পুরুষ, সৃষ্টিসুখের উল্লাসে কাঁপা-
স্বাধীনতা তুমি
শহীদ মিনারে অমর একুশে ফেব্রুয়ারির উজ্জ্বল সভা
স্বাধীনতা তুমি
পতাকা-শোভিত শ্লোগান-মুখর ঝাঁঝালো মিছিল।
স্বাধীনতা তুমি
ফসলের মাঠে কৃষকের হাসি।
স্বাধীনতা তুমি
রোদেলা দুপুরে মধ্যপুকুরে গ্রাম্য মেয়ের অবাধ সাঁতার।
স্বাধীনতা তুমি
মজুর যুবার রোদে ঝলসিত দক্ষ বাহুর গ্রন্থিল পেশী।
স্বাধীনতা তুমি
অন্ধকারের খাঁ খাঁ সীমান্তে মুক্তিসেনার চোখের ঝিলিক।
স্বাধীনতা তুমি
বটের ছায়ায় তরুণ মেধাবী শিক্ষার্থীর
শানিত কথার ঝলসানি-লাগা সতেজ ভাষণ।
স্বাধীনতা তুমি
চা-খানায় আর মাঠে-ময়দানে ঝোড়ো সংলাপ।
স্বাধীনতা তুমি
কালবোশেখীর দিগন্তজোড়া মত্ত ঝাপটা।
স্বাধীনতা তুমি
শ্রাবণে অকূল মেঘনার বুক
স্বাধীনতা তুমি পিতার কোমল জায়নামাজের উদার জমিন।
স্বাধীনতা তুমি
উঠানে ছড়ানো মায়ের শুভ্র শাড়ির কাঁপন।
স্বাধীনতা তুমি
বোনের হাতের নম্র পাতায় মেহেদীর রঙ।
স্বাধীনতা তুমি বন্ধুর হাতে তারার মতন জ্বলজ্বলে এক রাঙা পোস্টার।
স্বাধীনতা তুমি
গৃহিণীর ঘন খোলা কালো চুল,
হাওয়ায় হাওয়ায় বুনো উদ্দাম।
স্বাধীনতা তুমি
খোকার গায়ের রঙিন কোর্তা,
খুকীর অমন তুলতুলে গালে
রৌদ্রের খেলা।
স্বাধীনতা তুমি
বাগানের ঘর, কোকিলের গান,
বয়েসী বটের ঝিলিমিলি পাতা,
যেমন ইচ্ছে লেখার আমার কবিতার খাতা।
৩. বাতাসে লাশের গন্ধ(‘গ’ বিভাগ)
–রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ
আজো আমি বাতাসে লাশের গন্ধ পাই
আজো আমি মাটিতে মৃত্যূর নগ্ননৃত্য দেখি,
ধর্ষিতার কাতর চিৎকার শুনি আজো আমি তন্দ্রার ভেতরে…
এ দেশ কি ভুলে গেছে সেই দু:স্বপ্নের রাত, সেই রক্তাক্ত সময়?
বাতাসে লাশের গন্ধ ভাসে
মাটিতে লেগে আছে রক্তের দাগ।
এই রক্তমাখা মটির ললাট ছুঁয়ে একদিন যারা বুক বেঁধেছিলো।
জীর্ণ জীবনের পুঁজে তারা খুঁজে নেয় নিষিদ্ধ আঁধার,
আজ তারা আলোহীন খাঁচা ভালোবেসে জেগে থাকে রাত্রির গুহায়।
এ যেন নষ্ট জন্মের লজ্জায় আরষ্ট কুমারী জননী,
স্বাধীনতা– একি তবে নষ্টজন্ম?
একি তবে পিতাহীন জননীর লজ্জার ফসল?
জাতির পতাকা খামচে ধরেছে আজ পুরোনো শকুন।
বাতাশে লাশের গন্ধ
নিয়ন আলোয় তবু নর্তকীর দেহে দোলে মাংসের তুফান।
মাটিতে রক্তের দাগ–
চালের গুদামে তবু জমা হয় অনাহারী মানুষের হাড়
এ চোখে ঘুম আসে না। সারারাত আমার ঘুম আসে না-
তন্দ্রার ভেতরে আমি শুনি ধর্ষিতার করুণ চিৎকার,
নদীতে পানার মতো ভেসে থাকা মানুষের পচা লাশ
মুণ্ডুহীন বালিকার কুকুরে খাওয়া বীভৎস শরীর
ভেসে ওঠে চোখের ভেতরে। আমি ঘুমুতে পারি না, আমি
ঘুমুতে পারি না…
রক্তের কাফনে মোড়া– কুকুরে খেয়েছে যারে, শকুনে খেয়েছে যারে
সে আমার ভাই, সে আমার মা, সে আমার প্রিয়তম পিতা।
স্বাধীনতা, সে আমার– স্বজন, হারিয়ে পাওয়া একমাত্র স্বজন–
স্বাধীনতা– আমার প্রিয় মানুষের রক্তে কেনা অমূল্য ফসল।
ধর্ষিতা বোনের শাড়ি ওই আমার রক্তাক্ত জাতির পতাকা।

Related posts

সুপ্রভাত, শুভ হোক সবকিছু…..

E Zero Point

ভারতের অভয়ারণ্য (পর্ব-১) :~কুইজের খোঁজ খবর ও প্রতিযোগিতা-২৪ (চর্তুথ সপ্তাহ)

E Zero Point

ফিরে দেখাঃ শব্দগুচ্ছ যা অনুপ্রেরণা দেয় চলার পথে

E Zero Point

মতামত দিন