জিরো পয়েন্ট নিউজ ডেস্ক, আনোয়ার আলি, মেমারি, ১৯ মার্চ ২০২৪ :
শনিবার লোকসভা ভোটের দামামা বাজার আগেই রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রচার প্রস্তুতি শুরু হয়েগিয়েছিল। প্রচারের উত্তাপ ছিল পূর্ব বর্ধমান জেলার মেমারিতেও। বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছে ডাঃ শর্মিলা সরকার। রবিবার মেমারি শহরে তৃণমূল কংগ্রেসের এক সভায় তিনি উপস্থিত ছিলেন। সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, মেমারি বিধানসভার বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য, মেমারি পৌরসভার চেয়ারম্যান স্বপন বিষয়ী সহ অন্যান্যরা।
অতিথিদের সম্মননা, নেতৃত্ব তথা প্রার্থীর বক্তব্য, সিপিআইএমের অপশাসন ও সাম্প্রদায়িক দল বিজেপির অত্যাচারের কথা উপস্থিত তৃণমূল কর্মীদের উজ্জীবিত করছিল বুথে বুথে লোকসভা নির্বাচনের প্রচার কার্যের জন্য। এ পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। একে একে আমন্ত্রিত রাজ্যের মন্ত্রী, তৃণমূল মনোনীত প্রার্থী, তৃণমূল নেতৃত্ব চলে যাওয়ার পরই সেই সভাতেই ঘটে গেল একটি অবমাননাকর ঘটনা।
বলা যেতে পারে বিপত্তি হল সভার শেষে। অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার সময় জাতীয় সঙ্গীত গাইলেন উপস্থিত নেতা-নেত্রীরা। সভামঞ্চে মাইক হাতে ছিল মেমারি শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সহ সভাপতি আশিষ ঘোষ দোস্তিদার, সঙ্গে ছিলেন মেমারি বিধানসভার বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য, মেমারি শহর তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি অচিন্ত্য চ্যাটার্জী, মেমারি শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি সেখ মিনহাজউদ্দিন, মেমারি শহর জয়হিন্দ বাহিনীর প্রাক্তন সভাপতি অজিত সিং ছাড়াও মেমারি পৌরসভার বেশ কয়েজন কাউন্সিলর।
আর সেই মঞ্চেই উঠল জাতীয় সঙ্গীত অবমাননা করার অভিযোগ। তাল কাটলো, একবার, দুবার, তিনবার। প্রথমে মেমারি শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সহ সভাপতি আশিষ ঘোষ দোস্তিদার, “বিন্ধ্য হিমাচল যমুনা গঙ্গা, উচ্ছল জলধিতরঙ্গ” লাইন বাদ দিয়ে পরের লাইনে চলে যান। দ্বিতীয় ভুল হয় – “জনগণমঙ্গলদায়ক জয় হে” – এর পরিববর্তে বলেন “জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে।” ঠিক সেই সময় মেমারি শহর জয়হিন্দ বাহিনীর প্রাক্তন সভাপতি অজিত সিং মাইক নিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে এলে তৃতীয় ভুল করেন তিনি। “জয় হে, জয় হে, জয় হে,” বলার পর থেমে যান, “জয় জয় জয়, জয় হে” আর উচ্চারিত হলো না। তার পর ২০ সেকেন্ডের বিব্রতকর বিরতির পর স্লোগান ওঠে জয় বাংলা, বন্দেমাতরম ও দলীয় স্লোগান।
ভুলে ভরা জাতীয় সঙ্গীতের ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই ভাইরাল হয়। নেট নাগরিকদের ট্রোলের শিকার হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে সেই ভিডিয়ো। কেউ বলছেন, ‘শেখার শেষ নেই। এই বয়সেও জাতীয় সঙ্গীত শেখা উচিৎ।’ আবার কেউ বলছেন, ‘জাতীয় সঙ্গীতটাও জানা নেই!’ কেউ বলছে “এটা আমাদের লজ্জা যে মাঝের কিছু অংশ বাদ দিয়ে ভুল জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হচ্ছে, তারপর আবার জয় বাংলা বন্দে মাতরম বলা হচ্ছে, এটার পর ও এই জিনিস টা খবর হচ্ছে কিন্তু সেখানে যারা যারা ছিল কেও প্রতিবাদ জানালো না ভুল টা ধরিয়ে দিল না লজ্জা”| আর একজন নেট নাগরিক বলেছেন “দয়া করে জাতীয় সংগীত ভালো করে শিখে নিন, এভাবে অবমাননা করলে একজন ভারতীয়র লজ্জা।”
ষদিও এব্যপারে সেইসময় মঞ্চে উপস্থিত বিধায়ক কিংবা তৃণমূল নেতাদের পক্ষ থেকে কোন ভুলস্বীকার কিংবা পরে কোন বিবৃতি সংবাদমাধ্যমে কিংবা সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ পায়নি এখনও পর্যন্ত।