01/05/2024 : 7:15 PM
আমার দেশ

নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে দামোদরে বালি তোলা হচ্ছে অবাধেঃ প্রশাসনের ভূমিকায় প্রশ্নচিহ্ন

জিরো পয়েন্ট নিউজ ডেস্ক, আনোয়ার আলি, পূর্ব বর্ধমান, ২২ এপ্রিল ২০২৪ :


ভারতে বেআইনি বালি খনন পেনাল কোড, ১৮৬০ এর ধারা ৩৭৮ এবং ৩৭৯ এর অধীনে একটি অপরাধ। এর কারণ হল প্রাকৃতিক সম্পদ জনসাধারণের সম্পত্তি, এবং রাষ্ট্র তার ট্রাস্টি। নদ-নদী থেকে অবৈধ ও অতিরিক্ত বালি উত্তোলনের ফলে পরিবেশের ভারসাম্যের বিপর্যয় ঘটতে পারে। কিন্তু সরকারী এই নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলার শক্তিগড়-বড়শুল এলাকায় দিনে দুপুরে দামোদর নদে ট্রাক নামিয়ে বালি তোলা হচ্ছে প্রতিদিন। অবৈধভাবে বালি খাদান গুলো থেকে বেপরোয়াভাবে বালি তোলার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বালি মাফিয়ারা।

জানা যায় পূর্ব বর্ধমান জেলার শক্তিগড় থানার বড়শুল এর দামোদর নদের বেশ কয়েকটি ঘাট যেমন তালতলা ঘাট , শ্মশান ঘাট, মনি ঘাঁটি ঘাট, মাঝের ঘাট, বড়তলা ঘাট, মেশিন ঘাট ইত্যাদি ঘাটগুলি থেকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বালি তোলা বন্ধের নির্দেশ জারি করা থাকলেও, সেখানে গিয়ে দেখা গেল অবৈধ ভাবে বালি তোলার রমরমা কারবার। এই সমস্ত ঘাট থেকে অতিকায় ট্রাকে, ডাম্পারে, লড়ি, ট্রাক্টরে করে ওভারলোডেড বালি পাচার করা হচ্ছে কলকাতা সহ শহরতলী বিভিন্ন জায়গায় । এছাড়া কিছু কিছু জায়গায় দেখা গেল, বেআইনি ভাবে মজুত করে রাখা হয়েছে পাহাড় সমান বালির স্তূপ। রাতের অন্ধকারে নয়, একেবারে ভর দুপুরেও চলছে মেশিনের সাহায্যে বালি চুরি।

এলাকার সেররকমই একটি ঘাটে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা পৌঁছালে অবৈধ ভাবে বালি তোলার অফিসে তালা লাগিয়ে চম্পট দেয় কর্মচারীরা। বেশ কয়েকটি অফিস অনেক আগে থাকতেই বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। কিছু বালিখাতের বহু পুরাতন পারমিশন বোর্ড দেখা গেলেও সেখানে কোন তারিখের উল্লেখ নেই।

প্রত্যেকটি ট্রাকে ১০০০ সিএফটি-র বেশি বালি উঠছে। অর্থাৎ, পরিবহণের নির্ধারিত মাত্রার অতিরিক্ত বালি তোলা হচ্ছে। বালি যেহেতু যন্ত্র দিয়ে তোলা হচ্ছে, ফলে নদীর মাঝখানে বিশাল বিশাল গর্ত তৈরি হচ্ছে। এর ফলে দামোদরের জলধারণের ক্ষমতাও কমছে। এছাড়া নদীর গতিপথ পাল্টে যাওয়া সম্ভবনা রয়েছে । সেই সাথে ভেজা বালির জল ট্রাক থেকে নীচে পড়ে রাস্তাও নষ্ট করছে।

মাঝে মাঝেই ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তরের আধিকারিক ও পুলিশ এই অবৈধ বালি ঘাট গুলিতে অভিযান চালিয়ে অবৈধ কারবারিদের বিরুদ্ধে এফ আই আর করে। বালির গাড়ির বিরুদ্ধে জরিমানাও করা হয়। কিন্তু প্রশাসন চলে গেলেই পুনরায় শুরু হয় বালি তোলার কাজ ।

এই অবৈধ কাজে বালি মাফিয়াদের সঙ্গে প্রশাসনের একাংশ এবং স্থানীয় কিছু লোকজন জড়িত রয়েছে বলেও এলাকা সূত্রে জানতে পারা গেছে। আসলে বালি মাফিয়াদের সিন্ডিকেট যে বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

তবে অবিলম্বে চুরি ঠেকাতে, প্রশাসন সদর্থক ভূমিকা গ্রহণ করে বালি মাফিয়াদের দৌরত্বে লাগাম পড়াতে না পারলে একদিকে যেমন নষ্ট হবে পরিবেশের ভার সাম্য অন্যদিকে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাবে জনগণের মনে।

Related posts

ন্যাশনাল প্রেস ডে উদযাপন করেছে প্রেস কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া

E Zero Point

দৃষ্টিহীন পড়ুয়াদের সর্বভারতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো মেমারিতে

E Zero Point

বেঞ্জামিন নেতানইয়াহু এবং ইজরালবাসীকে হানুক্কাহ-এর শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর

E Zero Point

মতামত দিন