06/05/2024 : 5:09 PM
অন্যান্য

ঢাকুরিয়ার বুদ্ধমন্দির

ডঃ সায়ন ভট্টাচার্য (অগ্নিমিত্র)


আজ যেখানে ঢাকুরিয়ায় আমরি হাসপাতাল, আগে সেখানে নিরাময় পলিক্লিনিক নামের এক সরকারি হাসপাতাল ছিল । সেখানে কোয়ার্টারে থাকতাম আমরা ।
ওখান থেকেই একটু এগিয়ে লেকের , মানে রবীন্দ্র সরোবরের রাস্তায় বাঁ দিকে ছিল জাপানী বুদ্ধমন্দির । মানে আজো সে আছে । .. দোতলা মন্দির, সামনে উঠোন ও বাগান, একপাশে শ্রমণদের থাকা ও খাওয়ার ঘর ।
ছোটবেলায় আমাদের ওটা প্রিয় জায়গা ছিল। বাগানে ঘুরতাম ও খেলতাম ; একটা সিংহমূর্তি ছিল, তার আড়ালে লুকোচুরি খেলা চলতো । বুড়ো একজন কেয়ারটেকার আমাদের ও অন্যান্য বাচ্চাদের চোখে চোখে রাখতো, পাছে আমরা কিছু গাছপালা নষ্ট করে দিই । বাগানে টগর, দোপাটি, গোলাপ ইত্যাদি গাছ ছিল অনেক ।
মন্দিরে উঠতে হবে অনেক সিঁড়ি পেরিয়ে । ভিতরে ভগবান বুদ্ধের বিরাট সৌম্য মূর্তি । তার নীচে মন্দির প্রতিষ্ঠাতার ছবি ।
রোজ সন্ধ্যায় মন্দিরে পূজা ও আরতি হতো । শ্রমণরা অনেকেই ছিলেন জাপানী; সুর করে গাইতেন -‘ না মু ম্যো হো রেঙ্গে ক্যো,। ঐ একই মন্ত্র জাপানী ভাষায় প্রবেশপথেও লেখা ছিল ।
আমরা বা অন্যরা ঐ সময়ে ভিতরে গেলে ছোট হাতলওলা ঢোল ডান্ডি দিয়ে বাজাতাম । সেগুলো ওখানেই রাখা থাকতো । .. শ্রমণরাও বিরাট দুটি ঢোল বাজাতেন ও ঐ মন্ত্র পড়তেন । তারপর আমাদের নকুলদানা প্রসাদ দিতেন । ঐজন্যই আমরা আরো যেতাম ওখানে ।
বিশেষ করে বুদ্ধ পূর্ণিমার দিন দারুণ আয়োজন হতো । ভক্তরা ধূপ ও মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রার্থনা করতেন । অনেকে একটি সামনে রাখা ছোট বুদ্ধমূর্তিতে দুধ বা জল ঢালতেন । এই সব ভক্তদের মধ্যে যে সবাই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ছিলেন তা নয় । বেশির ভাগই হিন্দু ছিলেন! . ..
তারপর নিরাময় পলিক্লিনিক বেসরকারিকরণ হলো, আমরাও অন্য পাড়ায় চলে গেলাম ; তবে স্মৃতিতে ঢাকুরিয়া বুদ্ধ মন্দির আজও প্রোজ্জ্বল!
বুদ্ধ পূর্ণিমার পুণ্য লগ্নে আজ সেকথাই স্মরণ করলাম।

Related posts

মেমারি বড়পলাশনে যুবকের আত্মহত্যা

E Zero Point

অনুগামীদের অপদস্থ করার চেষ্টা করলে, মেরে হাড়গোড় সমান করে দেবোঃ বিধায়ক

E Zero Point

১৫ এপ্রিল পর্যন্ত স্থগিত উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা, করোনার ভয়ে বাতিল ২৩-২৫ মার্চের পরীক্ষা

E Zero Point

মতামত দিন