30/10/2024 : 5:05 AM
অন্যান্য

উড়ছে না ফানুস, নেই সম্মিলিত প্রার্থনা -বুদ্ধ পূর্ণিমায়

অজয় কুমার দে , মুর্শিদাবাদ


আজ বুদ্ধ পূর্ণিমা।করোনা মহামারিতে ভিন্ন প্রেক্ষাপটে উদযাপন হচ্ছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব বুদ্ধ পূর্ণিমা।এবার উড়বে না ফানুস, থাকছে না সম্মিলিত প্রার্থনা। ভক্তদের ঘরে বসেই জীব ও জগতের মঙ্গল কামনায় অংশ নেয়ার আহ্বান ধর্মীয় গুরু ও সংগঠনের নেতাদের।
বুদ্ধ পূর্ণিমা বা বৈশাখী পূর্ণিমা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্য এক পবিত্র দিন। এটি বৈশাখ মাসের পূর্ণিমা তিথি। এই বুদ্ধ পূর্ণিমার রাতেই সিদ্ধার্থ গৌতম থেকে বুদ্ধে পরিণত হয়েছিলেন তিনি কারণ বহু দুর্লভ, অপ্রাপ্য বোধি লাভ করেছিলেন। বোধি মানে জ্ঞান, এরই ফলে তিনি হয়েছিলেন পরম জ্ঞানী।
বৌদ্ধদের বিশ্বাস, খ্রিস্টপূর্ব ৬২৩ অব্দের এ দিনে গৌতম বুদ্ধ জন্মগ্রহণ করেন, ৫৮৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দের এ দিনে তিনি বোধিলাভ করেন এবং ৫৪৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দের এ দিনে তিনি নির্বাণ লাভ করেন৷সিদ্ধার্থের বুদ্ধত্বলাভের মধ্য দিয়েই বৌদ্ধধর্ম প্রবর্তিত হয়৷ তার আবির্ভাব, বোধি লাভ ও নির্বাণ- তিন ঘটনাই বৈশাখী পূর্ণিমার দিনে ঘটেছিল বলে একে বলা হয় ‘বুদ্ধ পূর্ণিমা’৷
প্রথম জীবনে তিনি ছিলেন নেপালের কপিলাবস্তু রাজ্যের রাজা শুদ্ধোধনের সন্তান। খৃস্টপূর্ব ৬২৪ অব্দে তিনি নেপালের লুম্বিনী বাগানে জন্মগ্রহণ করেন, খৃস্টপূর্ব ৫৮৯ অব্দে বোধিজ্ঞান লাভ করেন ভারতের বুদ্ধগয়ায় এবং খৃস্টপূর্ব ৫৪৪ অব্দে মহাপ্রয়ান করেন ভারতেরই কুশীনগরে ৷ মহাপ্রয়াণের বৌদ্ধিক লব্দ হলো মহাপরিনির্বাণ।তিনি মানুষের দুঃখ মুক্তির পথ অন্বেষণের জন্য ২৯ বছর বয়সেই সংসার ত্যাগ করেছিলেন।সাধারণত বিশ্বের কোনও মহামানবের জীবনের ৩টি প্রধান ঘটনা একই তিথিতে সংঘতে খুব কমই দেখা যায়।
সে জন্য এই পূর্ণিমা বৌদ্ধদের সর্বশ্রেষ্ঠ পূর্ণিমা এবং জাকজমকপূর্ণ ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক উৎসবে পরিণত হয়েছে।বৌদ্ধ দর্শনের মূল লক্ষ্য সত্যকে উপলদ্ধি করে দুঃখমুক্তি৷ বুদ্ধের শিক্ষা- মানুষ কর্মের অধীন, জগতে কর্মই সব৷ যার যেমন কর্ম, তিনি ফলও পাবেন তেমন৷ এ দর্শনের মূলমন্ত্র- ‘সব্বে সত্তা সুখিতা ভবন্তু’, অর্থাৎ জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক৷

ধর্মের মূল লক্ষ্য হল সাম্য, মৈত্রী, করুণা, অহিংসা ও মানবতাবাদ। জাতিভেদ, বর্ণভেদ, বৈষম্য ও নিপিড়ীত সমাজে বুদ্ধের এই আহ্বান মানুষকে স্বস্তি ও শান্তি এনেছিল। সমাজের সর্বস্তরে তখন সামাজিক, ধর্মীয়, অর্থনৈতিক বৈষম্যের ফলে মানবজীবনে যে হতাশা ও ব্যর্থতার সৃষ্টি হয়েছিল-সেই ব্যর্থতা থেকে মানুষকে তথা মানবতাকে উদ্ধার করে গণমুখী গ্রহণযোগ্য জীবন পদ্ধতির নির্দেশ দিয়েছিলেন। সে সময়ে সমাজে নারীরা ছিল ঘৃণিত, বুদ্ধ তাদের এই দুঃসহ অবস্থা থেকে মুক্ত করে পুরুষের পাশাপাশি সম মর্যাদা দিয়েছিলেন।
বৈশাখ মাসের পূর্ণিমা অর্থাৎ বুদ্ধ পূর্ণিমাকে একসঙ্গে পালন করেন সনাতন ধর্মের পরম্পরা ৷এই দিনটিতে নিয়ম মেনে কয়েকটি কাজ করলে কাজে সফলতা আসে বলে অনেকে মনে করেন। এই দিন পুজো-অর্চনা করলে সংসারে সুখ সমৃদ্ধি ফিরে আসে।
তাই অনেকে এই দিনে বাড়িতে নারায়ণের পুজো করে থাকেন। শাস্ত্রমতে এই দিনে দুঃস্থদের বস্ত্র ও অন্ন দিয়ে সাহায্য করলে পরিবারের মঙ্গল হয়। তবে, শাস্ত্র মতে এই দিন আমিষ খাবার না খাওয়াই ভালো। কেননা বুদ্ধ পশু-পক্ষী নিধনের বিরোধী ছিলেন।

Related posts

ঈদ উপলক্ষে বস্ত্র বিতরণ মেমারি ১০নং ওয়ার্ডে

E Zero Point

মেমারি বাসষ্ট্যান্ডে বাস-ট্রেকার ইউনিয়ন থেকে ৪০০ স্টাফদের অন্নসামগ্রী প্রদান

E Zero Point

পূর্ব বর্ধমানের খন্ডঘোষের বাসিন্দা কলকাতায় করোনা আক্রান্তঃ পরিবারকে পাঠানো হল কোয়ারিন্টনে

E Zero Point

মতামত দিন