জিরো পয়েন্ট নিউজ ডেস্ক, এম. কে. হিমু, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০:
‘সকলে বলছে সে-ই ইস্কুল চাই, বাঁশরী শেখাবে কিশোর কৃষ্ণকালা, সকলে বন্ধু, সকলে সবার ভাই, আমি তাই গড়ি ছায়াঘেরা পাঠশালা’ -কবি আরণ্যক বসুর এই ভাবনার বাস্তব রুপায়ণের লক্ষ্যে এগিয়ে এলো পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ার আলাপন সংস্থার সদস্যরা।
হলদিয়া সমাজ কল্যাণ পর্ষদের আয়োজনে এবং আলাপনের উদ্যোগে গত ৩০ ডিসেম্বর বাসুদেবপুরের গান্ধী আশ্রমে আয়োজিত হল এক অন্যরকম আবৃত্তির কর্মশালা ও কবিতার আড্ডা।
সমগ্র অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট কবি, আবৃত্তিকার, নাট্যকার আরণ্যক বসু। প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাবুপুর উচ্চ কৃষি বিদ্যালয়ের প্রাক্তণ শিক্ষক দিলীপ কুমার বেরা। হলদিয়া সমাজ কল্যাণ পর্ষদের সম্পাদক দুলাল চন্দ্র সামন্ত, সহ-বিদ্যালয় পরিদর্শক স্বপন কুমার জানা, হলদিয়া পুনর্বাসন বিদ্যা নিকেতনের প্রধান শিক্ষক ডঃ তপন কুমার জানা সহ প্রমুখ বিশিষ্ট গুণীজনেরা উপস্থিত ছিলেন অতিথি রুপে।
কবি আরণ্যক বসুর নেতৃত্বে সারাদিন ধরে কর্মশালা ও নানারকম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা হয়। আবৃত্তি কর্মশালা পরিচানায় সহযোগিতায় ছিলেন আরণ্যকের কবিতা বন্ধু পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা, শিক্ষিকা অনিন্দিতা শাসমল। যিনি একই সঙ্গে রক্তদান ও থ্যালাসেমিয়া রোগ প্রতিরোধ বিষয়ে সচেতচনামূলক বক্তব্য রাখলেন।
কবি আরণ্যক বসু জানান যে, শিল্পনগরী হলদিয়ার বাসুদেবপুরের মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতি বিজড়িত গান্ধী আশ্রমে হলদিয়ার ‘আলাপন’এর উদ্যোগে এবং আরণ্যকের কবিতা বন্ধু পরিবারের সহযোগিতায় ও সহমর্মিতায়, আমাদের স্বপ্ন সফল হল “ছায়াঘেরা পাঠশালা”র শুভ সূচনার মাধ্যমে।
নারী আন্দোলনের আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব ,সাহিত্যিকা মালবিকা চট্টোপাধ্যায় বিশেষ কারণে উপস্থিত থাকতে না পারলেও টেলিফোনের মাধ্যমে সরসরি তাঁর আশীর্বাদ ও শুভেচ্ছাবার্তা পাঠালেন, যা মাইক্রোফোনে শোনানোর ফলে, উপস্থিত সবাইকে প্রাণিত করেছে।
আলাপনের পরিচালক দেবব্রত রায় বলেন, হলদিয়ার বাসুদেব পুরে এই স্থানে জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধীর শুভাগমন হয়েছিল। সেই শুভাগমনের ৭৫ বর্ষপূর্তিতেই ছায়াঘেরা পাঠশালার যাত্রা শুরু হওয়ায় আমরা আপ্লুত হলাম।
আরণ্যক বসু কবিতা বন্ধু পরিবারের অনিন্দিতা শাসমল আমাদের প্রতিনিধিকে জানান যে, কবি আরণ্যক বসু’র ‘মেঘ চলেছে হলুদ পুকুর’ কাব্যগ্রন্থের বিখ্যাত কবিতা “ছায়াঘেরা পাঠশালা” আসলে এমন একটি ইস্কুলের স্বপ্ন, যেখানে মেঘ রোদ্দুর নীলাকাশ, আলো হাসি গান ,সহজ সুন্দর মানবিক ব্যবহার– মানুষের জীবন থেকে অন্ধকার মুছে দেবার সাধনা করবে। ধর্ম ও জাতের ব্যবধান নিঃশেষে মুছে দেবে। মানুষ ও প্রকৃতির বন্ধনকে দৃঢ় করবে। শিশুরা বেড়ে উঠবে তাদের স্বপ্নের শৈশবের আনন্দ নিয়ে।