16/04/2024 : 5:24 PM
অন্যান্য

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বার্তা

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বার্তা


নমস্কার !!
জাতির পিতা,
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজীবর রহমান এর,
একশোতম জন্ম জয়ন্তী,
উপলক্ষে,
সমগ্র বাংলাদেশকে,
আপনাদের একশো ত্রিশ কোটি ভারতীয়,
ভাই ও বন্ধুদের পক্ষ থেকে,
অনেক অনেক অভিনন্দন,
এবং শুভকামনা !!!

বন্ধুগণ,
শেখ হাসিনা মহোদয়া আমাকে এই ঐতিহাসিক সমারোহে অংশগ্রহণের জন্য ব্যক্তিগতভাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।
কিন্তু করোনা ভাইরাসের জন্য আমার যাওয়া সম্ভব হ’ল না।
তারপর শেখ হাসিনা মহোদয়া এই বিকল্প সুযোগ দিয়েছেন, আর সেজন্যে আমি ভিডিও-র মাধ্যমে আপনাদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছি।

বন্ধুগণ,
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজীবর রহমান বিগত শতাব্দীর মহান ব্যক্তিত্বদের অন্যতম। তাঁর সমগ্র জীবন, আমাদের সকলের জন্য অনেক বড় প্রেরণা।
বঙ্গবন্ধু মানে
একজন সাহসী নেতা,
একজন দৃঢ়চেতা মানুষ,
একজন ঋষিতুল্য শান্তির দূত,
একজন ন্যায়, সাম্য ও মর্যাদার রক্ষাকর্তা,
একজন অত্যাচার বিরোধী,
এবং,
যে কোন জোরজুলুমের বিরুদ্ধে এক ঢাল!!
তাঁর এই গুণাবলী সেই সময় বাংলাদেশের মুক্তির জন্যে, সমস্ত সমস্যা মোকাবিলায় একটা নতুন লক্ষ লক্ষ যুবক-যুবতীকে প্রাণশক্তি সঞ্চার করেছিল।
আজ আমার খুব ভাল লাগে, যখন দেখি যে বাংলাদেশের মানুষ, কিভাবে নিজেদের প্রিয় দেশকে শেখ মুজীবর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়ে তুলতে দিন-রাত কাজ করে চলেছেন।

বন্ধুগণ,
বঙ্গবন্ধুর জীবন, আজকের আন্তর্জাতিক পরিবেশে, একবিংশ শতাব্দীর বিশ্বের জন্য অনেক বড় বার্তা দেয়।
একটি দমনকারী, অত্যাচারী শাসন, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বিরোধী ব্যবস্থা, কিভাবে বাংলাভূমির সঙ্গে অন্যায় করেছে, মানুষের সর্বনাশ করেছে, তা আমরা সবাই খুব ভাল ভাবে জানি।
সে সময় যে ধ্বংসলীলা হয়েছিল, যে গণহত্যা হয়েছিল, সেই অবস্থা থেকে বাংলাদেশকে বের করে আনতে, একটি ইতিবাচক এবং প্রগতিশীল সমাজ নির্মাণের জন্য তিনি নিজের প্রতিটি মুহূর্ত উৎসর্গ করে দিয়েছিলেন।
তাঁর স্পষ্ট মত ছিল যে কোনও দেশের উন্নতির ভিত্তি ঘৃণা এবং নেতিবাচক হতে পারে না।
কিন্তু তাঁর এই ভাবনা, এই প্রচেষ্টা কিছু মানুষের ভাল লাগে নি আর তাঁকে আমাদের মধ্য থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
এই বাংলাদেশ এবং আমাদের সকলের সৌভাগ্য যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাজী এবং শেখ রেহানাজীর উপর ঈশ্বরের আশীর্বাদ ছিল, নাহলে হিংসা এবং ঘৃণার সমর্থকরা তো চেষ্টা কম করেন নি!
আতঙ্ক এবং হিংসাকে রাজনীতি ও কূটনীতির হাতিয়ার করে তুললে, তা কিভাবে গোটা সমাজের, সমগ্র দেশের সর্বনাশ করতে পারে, তা আমরা ভাল ভাবে দেখতে পাচ্ছি।
সন্ত্রাস ও হিংসার সমর্থকরা আজ কোথায়, কিভাবে আছে, আর বাংলাদেশ কোন উচ্চতায় পৌঁছে যাচ্ছে, এটাও বিশ্ববাসী দেখছে।

বন্ধুগণ,
বঙ্গবন্ধুর প্রেরণায় এবং শেখ হাসিনাজীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ যেভাবে সমন্বিত এবং উন্নয়ন-ভিত্তিক নীতিগুলি অনুসরণ করে এগিয়ে যাচ্ছে, তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।
অর্থনীতি থেকে শুরু করে অন্যান্য সামাজিক সূচক কিম্বা ক্রীড়াক্ষেত্রে আজ বাংলাদেশ অনেক রেকর্ড স্থাপন করে চলেছে।
দক্ষতা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারী ক্ষমতায়ন, মাইক্রো ফাইনান্স – এরকম অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব উন্নতি করেছে।
আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, বিগত ৫-৬ বছরে ভারত ও বাংলাদেশ পারস্পরিক সম্পর্কের যুগান্তকারী অধ্যায় গড়েছে, নিজেদের অংশীদারীত্বকে নতুন দিশা, নতুন মাত্রা প্রদান করেছে।
এটি আমাদের উভয় দেশের ক্রমবর্ধমান আস্থা, যার ফলে অনেক দশক ধরে যে স্থল-সীমান্ত বিবাদ এবং জলসীমা বিবাদের জটিলতাগুলি ছিল, আমরা সেগুলির সহজ সমাধানে সফল হয়েছি।

বন্ধুগণ,
বাংলাদেশ আজ দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের সব থেকে বড় বাণিজ্য-সঙ্গী আর সবচাইতে বড় উন্নয়ন সাথীও।
ভারতে উৎপাদিত বিদ্যুৎ দিয়ে বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ বাড়ি ও কারখানা আলোকিত হয়। ‘ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন-এর মাধ্যমে আমাদের পারস্পরিক সম্পর্কে নতুন মাত্রা জুড়েছে।
সড়কপথ, রেলপথ, আকাশপথ, জলপথ কিংবা ইন্টারনেট, এমন অনেক ক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতা উভয় দেশের নাগরিকদের আরও বেশি করে জুড়ছে।

বন্ধুগণ,
আমাদের ঐতিহ্যের সূচনা হয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, উস্তাদ আলাউদ্দীন খান, লালন শাহ, জীবনানন্দ দাশ এবং ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মতো মনিষীদের থেকে।
এই ঐতিহ্যকে বঙ্গবন্ধুর প্রেরণা, তাঁর উত্তরাধিকার আরও ব্যাপক করেছে। তাঁর আদর্শ, তাঁর মূল্যবোধের সঙ্গে ভারতভূমি সর্বদাই যুক্ত ছিল।
আমাদের এই ঐতিহ্য, আমাদের আত্মিক সম্পর্ক, বঙ্গবন্ধুর প্রদর্শিত পথ, এই দশকেও উভয় দেশের অংশীদারীত্ব, উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধির মজবুত ভিত্তি।
আগামী বছর বাংলাদেশের ‘মুক্তি’র ৫০ বছর পূর্ণ হবে আর তার পরের বছর অর্থাৎ, ২০২২ সালে ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্ণ হবে।
আমার বিশ্বাস, এই উভয় পর্যায়ে, ভারত-বাংলাদেশ উন্নয়নের নতুন উচ্চতায় পৌঁছনোর পাশাপাশি, উভয় দেশের বন্ধুত্বকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে।
আরেক বার গোটা বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধু শতাব্দী বর্ষের শুভকামনা জানিয়ে আমার বক্তব্য শেষ করছি।

ধন্যবাদ !!

জয় বাংলা, জয় হিন্দ !!!

 

Related posts

রসুলপুর ও মেমারির করোনা সৈনিকদের সম্মানিত করলো WE R RASULPURIAN

E Zero Point

লকডাউন ২.০ – যাত্রবাহী ট্রেন চলবে না ৩ মে পর্যন্তঃ ভারতীয় রেল

E Zero Point

উপ পৌরপ্রধানের উদ্দ্যোগে মেমারি হাসপাতালে স্যানিটাইজার স্প্রে

E Zero Point

মতামত দিন