করোনা মোকাবিলায় দেশ জুড়ে চলছে ২১ দিনের লকডাউন। এই অবস্থায় দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে বড় ঘোষণা করলো রিজার্ভ ব্যাংক। আজ রিজার্ভ ব্যাংকের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস এক সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানেই অর্থনীতির এই অবস্থায় রিজার্ভ কি করছে তা বিস্তারিত জানান। দেশের এই পরিস্থিতিতে রিজার্ভ ব্যাংক প্রথম পদক্ষেপ নিলো রেপো রেট কমানো। রিজার্ভ ব্যাংকের তরফে রেপো রেট কমিয়ে ৪.৪% করা হলো। ৫.১৫% থেকে কমিয়ে রেপো রেট বর্তমানে ৪.৪% করা হলো। রেপো রেট কমানো হলো ৭৫ বেসিস পয়েন্ট। শুধুমাত্র রেপো রেটই নয়, রিভার্স রেপো রেটও কমালো রিজার্ভ ব্যাংক। রিভার্স রেপো রেট কমিয়ে ৪% করে দেওয়া হয়েছে। রিভার্স রেপো রেট কমানো হয়েছে ৯০ বেসিস পয়েন্ট। আজ রিজার্ভ ব্যাংকের মুদ্রা নীতি কমিটির একটি বৈঠক হয়, সেখানেই করোনা পরবর্তীতে দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে এই পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তারপরই সাংবাদিক বৈঠক করেন রিজার্ভ ব্যাংকের গভর্নর। রিজার্ভ ব্যাংকের এই ঘোষণার ফলে কমবে EMI। মূলত সমস্ত ব্যাংক, কো-অপারেটিভ ব্যাংক, অর্থনৈতিক সংগঠন এবং NBFC-র ক্ষেত্রে আগামী ৩ মাসের জন্য EMI স্থগিত করা হয়েছে। করোনা ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচতে ১৪ই এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন জারি করা হয়েছে দেশ জুড়ে। এই লকডাউনে দেশের অর্থনীতি অনেকটাই পড়বে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। করোনা পরবর্তীতে ভারত কিভাবে অর্থনৈতিক বিপর্যয় সামলাবে সেদিকেই তাকিয়ে সবাই। আরবিআই গভর্নর আরও বলেন, এই ঘোষণার ফলে ১,৩৭,০০০ কোটি টাকার জোগান আসবে।
আরবিআই-এর গভর্নর আমানতকারীদের আশ্বাস দিয়ে জানিয়েছেন যে, ‘আপনাদের অর্থ সুরক্ষিত থাকবে।’ একইসঙ্গে তিনি আরও জানিয়েছেন, সমস্ত বকেয়া ঋণে তিন মাসের স্থগিতের অনুমতি দেওয়ায় রেপো রেট ও সিআরআর কমানো হয়েছে। আরবিআইয়ের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস এদিন বলেন যে, সময় এসেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার। ব্যবসা ক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা আনতে তিনি বেশ কিছু পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন, সেগুলি হল- ১) নমনীয়তা বাড়ানোর ব্যবস্থা করা, ২) একক ট্রান্সমিশন সরিয়ে নেওয়ার পদক্ষেপ করা, ৩) আর্থিক ঋণ পরিশোধ সহজ করার প্রচেষ্টা করা, ৪) বাজার স্থিতিশীল করার প্রচেষ্টা করা। করোনা ভাইরাসের তীব্রতা, বিস্তার এবং সময়কাল বিশ্বব্যাপী অর্থনীতির অবস্থা নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন আরবিআই-এর গভর্নর শক্তিত্তান্ত দাস। তিনি আরও বলেন যে, সরকার ভাল ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এবং করোনোভাইরাসের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে জিততে আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হবে যাতে আমরা জয় নিশ্চিত করতে পারি। করোনা ভাইরাসের প্রভাবে সারা বিশ্বে আর্থিক মন্দা নেমে আসতে পারে বলে ঈঙ্গিত দেন আরবিআই-এর গভর্নর। তবে তিনি মনে করিয়ে দেন যে, ‘কঠিন সময় কখনই স্থায়ী হয় না। কেবল কঠোর মানুষ এবং শক্ত প্রতিষ্ঠানগুলিই টিকে থাকে শেষ পর্যন্ত।’ আর্থিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করা এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য অবদান রাখা আমাদের কর্তব্য বলে জানান তিনি।