জিরো পয়েন্ট সাহিত্য আড্ডা
রবিবারের আড্ডা
এই সাপ্তাহিক ওয়েব পেজটি
————–৫ এপ্রিল ২০২০ রবিবার—————
গল্প
আগুন পাখি
সুতপা দত্ত
প্রিয়ার ফোনটা কাট করে পাশের সিটে রেখে, গাড়িতে স্টার্ট দেয় অর্ণব । বাড়ি ফেরার আগে প্রিয়াকে ফোন করাটা ওর প্রতিদিনের অভ্যেস ,সাথে ডিনারের মেনু জানা। অনি গাড়িতে স্টার্ট দিলেই প্রিয়াও টেবিল গোছানো ,খাবার গরম শুরু করে দেয় । এরপর দুটিতে বকবক করতে করতে ডিনার সারে । তারপর একটু ব্যালকনি-আড্ডা সেরে শুতে যায়।
অনির ফিরতে রোজই রাত্তির হয় , রাত বারোটা এখন নর্ম্যাল টাইমিং , আগে তবু দশটার মধ্যে বেরিয়ে পড়তো , এখন আর হয় না। বিশাল অফিস কম্পাউণ্ড পেরিয়ে মেন রাস্তায় প্রায় আড়াই তিন কিলোমিটার আসার পর শর্ট রুট নিয়ে নেয় অনি , এতো রাতেও মেন রাস্তায় সেই ট্র্যাফিক জ্যাম , তখন আর ইচ্ছে করে না , তাই গা ছমছম করলেও বরাবর এই রাস্তা দিয়েই ফেরে অর্ণব। দুটো গাড়ি পাশাপাশি যাওয়ার মতো রাস্তা , দুপাশে ঘন গাছের সারি , প্রথম বাঁকটা পেরোলেই আর একটা বাঁক , দ্বিতীয় বাঁকটার মুখেই সেই হাড় হিম করা অশ্বত্থ গাছটা আর তার নিচের ঘন অন্ধকার , অদ্ভুত একটা ফিলিং হয় ওর রোজই । এই জায়গাটার বাতাসও কেমন যেন ভারি ভারি । রাতের দিকে গাড়িও খুব কম যায় এদিকে , ফলে বেশ ফাঁকা ফাঁকা লাগে, প্রিয়া বারবার নিষেধ করা সত্বেও অনি কিন্তু এই রাস্তা ধরেই ফেরে ।
২২শে মার্চ , সোমবার । দু‘দিন ছুটির পরে আজ অফিস জয়েন করেছে অনি । ইয়ার এণ্ডিং এর ঝামেলায় আজ বেরোতেই সাড়ে বারোটা হয়ে গেল , প্রিয়ার ফোন রেখে ড্রাইভিং-এ মন দিলো অনি। আজও একই রাস্তা , সেই গা ছমছমে ভাব , আবারও সেই বাঁক । তবে আজকের দিনটা অনির মানসপট থেকে মুছে যাবে না কোনোদিনই । প্রথম বাঁকটা ঘুরতেই দূরে একটা জ্বলজ্বলে বিন্দু নজরে পড়ল , প্রথমে ভেবেছিল কোনো গাড়ির হেড লাইট , আর একটু এগোতেই বুঝলো আগুনের গোলার মতো কিছু , সাইজে বাড়ছে ! দ্বিতীয় বাঁকটা ঘুরতেই বলটা তীব্র বেগে ছুটে এলো , একদম কাছে আসতেই মনে হলো একটা জ্বলন্ত পাখি , কিছু রিএ্যাক্ট করার আগেই ঝাঁপিয়ে পড়লো গাড়ির উইন্ডস্ক্রিনে , নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিল প্রায় কিন্তু সামলে গেল কোনো মন্ত্রবলে , পাশ থেকে মোবাইলটা তুলে নিল , ওর অনামিকা দশটা সংখ্যা ছুঁয়ে দিল। তারপরের সময়টুকু যেন কোনো স্বপ্নের ঘোর , গ্যারেজে গাড়িটা ঢুকিয়ে কিছুটা যেন টলতে টলতেই লিফ্টে উঠল । ঘরে ঢোকার আগে যারপরনাই স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করল , প্রিয়া জানলো না কিছুই ।
বিয়ের পরেই অনির সাথে ব্যাঙ্গালোর চলে এসেছিল প্রিয়া , অনভ্যস্ত হাতে ধীরে ধীরে গুছিয়ে নিয়েছিল সংসার। দু’কামরার সাজানো গোছানো পরিপাটি ফ্ল্যাট , ব্যালকনি-তে একটু সবুজের রেশ , মাথার উপরে নীল আকাশের হাতছানি, ভালো আছে প্রিয়া – অনি। বাড়ি থেকে সকলেই একে একে ঘুরে গেছেন , দেখে গেছেন ওদের রাজ্যপাট , সক্কলে খুশি, আর কি চাই! সারা সপ্তাহের ব্যস্ততার শেষে একটু আউটিং, একটু গেট-টুগেদার , এইসব নিয়েই কেটে যায় মাসের পর মাস।
ভালোই ছিল ওরা , খুব ভালো ছিল , কিন্তু সুখ বড়ো আপেক্ষিক । ইদানীং বড্ড অন্যমনস্ক থাকে অনি , ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া করে না , একটুতেই ধৈর্য্য হারিয়ে ফেলে , খিটখিট করে সবসময় । সমীর-দার ওই ভাবে চলে যাওয়াটা অনি মেনে নিতে পারে নি । প্রিয়া কি কম কষ্ট পেয়েছে ! কিন্তু অনি এতটাই সফ্ট যে মন থেকে কিছুতেই ঝেড়ে ফেলতে পারছে না ঐ স্মৃতি। শিশুর মতো প্রিয়ার হাত দুটো ধরে বলে ‘ আমি বাঁচতে চাই , প্লিজ আমাকে বাঁচাও ’ । কখনও বলে , ‘ আর বাঁচবো না আমি , আমার কিছু একটা হয়েই যাবে ’। ভয়ে অস্থির অস্থির লাগে প্রিয়ার , তবু ধৈর্য্য ধরে বোঝায় , সাহস দেয় । অনেকবার বাড়িতে বলবে ভেবেছে , পারে নি , অতদূরে ওদের সবাইকেও ব্যস্ত করে তুলতে মন চায় নি । কিন্তু এখন যেন ওর বড্ড বেশি ভয় করছে । আজকাল বাড়ি ফিরতেও দেরী হচ্ছে , বেরোনোর পরের ফোন কল আর বাড়ি পৌঁছানোর সময়ের ব্যবধান দিন দিন বাড়ছে , প্রশ্ন করলেও সদুত্তর নেই ।
২২শে মার্চ থেকে আজ ২৯শে মার্চ , একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে চলেছে রোজই , কিন্তু কেন ! কি ঘটছে ! কেনই বা ঘটছে ! অফিসেও এবার তার প্রভাব পড়েছে , কাজ করতে পারছে না কিছুতেই , না খাওয়া, না ঘুম । আজও এসব ভাবতে ভাবতেই এসে পড়লো সেই বাঁকটা , ভয়ে কাঁটা দিল গায়ে, বিস্ফারিত দু‘টো চোখ নিবদ্ধ হলো সামনের রাস্তায় , আসছে , ঐ তো আসছে , সারা শরীরে বিদ্যুত প্রবাহ , প্রচণ্ড জোরে ডানা ঝাপটে এগিয়ে আসছে , আগুনে পাখিটা , নির্ভুল লক্ষ্যে ঝাঁপিয়ে পড়লো অনির গাড়ির কাঁচে , মুহুর্তের জন্য নিয়ন্ত্রণ হারালো অনি , কোনো অঘটন ঘটে নি আজ পর্যন্ত , গাড়ি চলছে আগের মতোই , তবে গতি অনেক শ্লথ । কোনো এক মন্ত্রবলে আবারও তুলে নিল মোবাইলটা, অনামিকা ছুঁয়ে দিল সেই দশটা সংখ্যা ।
সুদূর বাঁকুড়া শহরের মৈত্র পাড়ার দোতলা বাড়িটার একবুক নিঃস্তব্ধতা ভেঙে খান খান হলো , চমকে উঠে ফোনটা রিসিভ করলো শর্মিষ্ঠা । কতবার ভেবেছে , ধরবে না ফোন , ভুল করছে ও , অন্যায় করছে , কিন্তু কোথায় যেন একটা মিল, খুব মিল , কোথায় যেন ভীষণ আকুতি এক্কেবারে তার ই মতো , ইচ্ছে করে ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলে , নামাতে পারে না ফোনটা কান থেকে , চলতে থাকে কথা বেশ কিছুক্ষণ ধরে , ওর কথা মতোই গুছিয়ে রাখে অফিসের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র , শুনে নেয় আগামীকাল কোথায় গিয়ে কার সাথে দেখা করলে কাজ মিটবে , সেই মতো মিটেও যায় সবকিছু । অনেকবার ভেবেছে বলবে কাউকে , অন্তত একবার প্রিয়াকে জানাবে , পারে নি , কি বলবে গুছিয়েই উঠতে পারে নি।
১০ই এপ্রিল , অনিকে নিয়ে ডাক্তারের চেম্বারে এসেছে প্রিয়া , সঙ্গে অনির ঘনিষ্ঠ দুই বন্ধু । ব্লাড প্রেসার অনিয়মিত , মাঝে মাঝে এলোমেলো কথা , ডক্টর সবটা শুনে দেখে মেডিসিন প্রেসক্রাইব করলেন , সাথে স্ট্রেস রিলিফের ওষুধ-ও , বললেন ঘুমটা খুব প্রয়োজন। কিন্তু রোগী জানে সে সুস্থ হবে না এতে , রেস্ট নেওয়ার বদলে সে অফিস যাওয়ার জেদ ধরে , বাড়িতে থাকলেও রাত্রি হলেই কোনো এক অছিলায় বাইরে যেতে চায় । প্রিয়াও মানসিকভাবে বিধ্বস্ত , কাকে বলবে , কিভাবে বলবে , ও কি ভাবছে , কি বুঝছে !! অফিস থেকে বেরোনোর পরে ওর সাথে কথা বলে ঠিকই , কিন্তু তারপরেও ওর ফোন বিজি থাকে অনেকক্ষণ , তাই দেরি হয় ফিরতে , প্রশ্ন করলে স্বীকার করে না , এমনকি মোবাইলের কললিস্ট ঘেঁটেও কিছু পায় না , স্বভাবতঃই একটা অদ্ভুত দোলাচলে প্রিয়াও শেষ হয়ে যাচ্ছে ।
কোনো ইমপ্রুভমেন্ট না থাকায় , জেনারেল ফিজিসিয়ান আজ রেফার করে দিলেন সাইকোলজিস্টের কাছে । দু’ঘন্টার টানা সিটিং এর পর যখন প্রিয়ার ডাক পড়ল , সে তখন ভয়ে, ভাবনায়, উত্তেজনায় নিস্তেজ হয়ে পড়েছে , তবু শরীর টাকে টেনে নিয়ে হাজির হল ডক্টরের সামনে । তাঁর কথামতো একটা তীব্র মানসিক আঘাতের স্বীকার অনি , যার প্রত্যক্ষদর্শী প্রিয়াও । আরও দু’দিন ওনার কাছে আসতে বললেন , এবং খুব তাড়াতাড়ি ছুটি নিয়ে কয়েকটাদিন পরিজনদের মাঝে থাকার পরামর্শ দিলেন।
আজ অনির দাদা আসছেন ওদের নিয়ে যেতে । কাউন্সেলিং – এর রিপোর্ট অনুযায়ী , সমীর দার মৃত্যু গভীর দাগ কেটেছে অনির মনে । ছোটো থেকে দেখে আসা দাদার বন্ধু সমীর-দার একই শহরে বাড়ি। এয়ারফোর্সের অফিসার , খুব অল্প বয়সেই ভালো পদ , বাঁকুড়ার বুকে বাড়ি , গাড়ি । বৌদি , দু‘বছরের তিতির আর পাঁচ বছরের মৌ এতদিন বাঁকুড়ার বাড়িতেই ছিল বৃদ্ধ মা-বাবার কাছে। ছয় মাসের ব্যবধানে বাবা-মা দুজনেই চলে যাওয়ার পর বৌদিকেও কাছে নিয়ে যাবার প্রস্তুতি শুরু করেন দাদা , আর সেই মুহুর্তেই ঘটে যায় এক অভাবনীয় দুর্ঘটনা, ম্যাসিভ হার্ট এ্যাটাক । একটু স্টেবল হতেই এয়ারফোর্স অফিসাররা সমীর দাকে নিয়ে ব্যাঙ্গালোরের আর্মি হসপিটালে আসেন বেটার চিকিৎসার জন্য । বাড়ি থেকে ফোন পাবার পর দৌড়ে গিয়েছিল অনি আর প্রিয়া। খুব খুশি হয়েছিল দাদা ওদের দেখে । একটা অপারেশনের পর ধীরে ধীরে রিকভারিও হচ্ছিল । সে সময় অনি রোজ যেত , ওরা ডিসিশন নিচ্ছিল কলকাতায় শিফ্ট করানোর , সব আত্মীয় স্বজন তো ওদিকেই , তাই । ছোটো মেয়েটা অসুস্থ থাকায় বৌদিকেও আনা সম্ভব হচ্ছিল না , সেই সময় একদিন ওর হাত দুটো ধরে কেঁদে ফেলেছিলেন দাদা , বারবার বলেছিলেন ” আমাকে বাঁচা অনি , আমাকে বাঁচা , আমি খুব বাঁচতে চাই রে অনি , প্লিজ আমাকে বাঁচা” । অনি ডাক্তারদের জিজ্ঞাসা করেছিল , ওনারা আশ্বাসও দিয়েছিলেন , কিন্তু মানুষ ভাবে এক, হয় আর এক । কলকাতায় যাওয়ার দিন পাঁচেক আগেই শর্মিষ্ঠা বৌদি মেয়েদের নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন ব্যাঙ্গালোর, কিছু অফিসিয়াল সই সাবুদের কারণে। অনিরাও গিয়েছিল দেখা করতে। তার ঠিক দু‘দিন পরেই ১৫ই মার্চ শনিবার , রাত আটটা নাগাদ বৌদির ফোন , সমীর দা আবার সিরিয়াস , তড়িঘড়ি গিয়ে পৌঁছালো ওরা । কি আকুতি সেই দুই চোখে বাঁচার ! বাকরুদ্ধ , শুধু জল পড়ছে চোখ থেকে অনবরত , আবার একটা ছোটো এ্যাটাক , কিন্তু এবার আর শেষ রক্ষা হলো না , রাত নটা ছয় , সব শেষ । ওঃ ! বৌদির সে কি হাহাকার , কি বুকফাটা আর্তনাদ ! সমীর দা শেষ অবধিও অনিকে যেন কিছু বলতে চাইছিলেন , অনি ডাক্তারদের হাত ধরে বারবার অনুরোধ করলেও তাঁদের সব চেষ্টা ব্যর্থ হলো সমীর দার লিখে আনা দিনের কাছে । দুটো অবোধ শিশু পিতৃ হারা হলো, অল্প বয়সী একটা মেয়ে স্বামী হারালো , কি হবে এখন ওদের ! কিভাবে বাঁচবে ! সারারাত, এমনকি পরদিন শেষকৃত্য পর্যন্ত সমীর দার পাশ থেকে একটুও নড়েনি অর্ণব । লেলিহান শিখাটা সারা শরীরটাকে গ্রাস করে নেওয়া পর্যন্ত একভাবে চেয়েছিল সেইদিকে ।
প্রিয়া বুঝেছিল, এই ঘটনাই অর্ণবকে গ্রাস করছে তিলে তিলে । কিন্তু ফোনে এনগেজ থাকা , দেরি করে ফেরা – সব তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছিল যেন প্রিয়ার ।
অর্ণবের বাঁকুড়ার বাড়িতে আজ খানিকটা স্বস্তির বাতাবরণ , ছেলেকে কাছে পেয়ে বাবা-মাও অনেকটা আশ্বস্ত ।
ডাক্তার বলেছেন , মৃত ব্যক্তির শেষ কথাগুলোর সাথে নিজেকে ধীরে ধীরে জড়িয়ে ফেলেছিল অনি ; নির্জন রাস্তায়, অশ্বত্থ গাছের ভয়ার্ত পরিবেশে , চিতার লেলিহান শিখা আগুন পাখির রূপে ঢুকে পড়তো অনির মনের গোপন কুঠুরিতে ।তারপরেরটা মনোজগতের এক বিশেষ পরিস্থিতি , কিছুটা স্বপ্নের ঘোর , তাই সেটার প্রকিশটা এলোমেলো ।
বিকেলে শর্মিষ্ঠা গিয়েছিল অনি-দের বাড়িতে । সব ঘটনা শুনেই গিয়েছিল দেখা করতে , ওর ও যে অনেএএএএক কিছু বোঝার ছিল, জানার ছিল । খুব সাবধানে কথা বলে এটুকু বুঝলো , অনি যে মোবাইলে কথা বলত সেটা এখন অনির কাছে একটা ভ্রম , ঐ যে একটা অবচেতন মনের কল্পনা বা একজন অসহায় মানুষের প্রতি মনুষ্যত্বের তাগিদ। অনেকক্ষণ গল্প করার পর ফিরে এসেছিল শর্মিষ্ঠা ।
মনে মনে প্রার্থনা করেছিল প্রিয়া- অনি যেন ভালো থাকে , আর ওদের ভালো থাকাকে সুনিশ্চিত করতেই নিজেকে উন্মুক্ত করেনি কোনো ভাবেই। ও তো জানে , কোনোটাই কল্পনা নয় , প্রতিদিন রাতে , হ্যাঁ প্রতিদিন রাতে ও’ই রিসিভ করেছে সেই সব ফোন কলস , কথা বলেছে অনেক , যেখানে যা কিছু পাওয়ার ছিল তার সবটাই পেয়েছে ঐ ফোনেরই কারণে। তবে সে অনি নয় ; শর্মিষ্ঠার বাড়ির আলমারি , সেই আলমারিতে রাখা কাগজপত্র , চেকবুক, পাসবই ,টাকা-পয়সা – এইসব কিছুর হিসাব যার কাছে ছিল , যে অকালে একলা করে দিয়ে চলে গেল , এ ‘সে’-ই , হ্যাঁ ‘সে’-ই , ওর সমীর । পরিবারকে, আদরের সন্তানদের-কে ভেসে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচাতেই অনির সাহায্য নিয়েছিল ‘সে’ ।
আজ দিন সাতেক তার ফোন আর আসে না , হয়তো আসবে না আর কোনোদিন , তবু শর্মিষ্ঠার অবচেতন মন রাত বারোটার অপেক্ষায় থাকবে প্রতিদিন । আরও একবার ভালোবাসা হারানোর যন্ত্রণায় ডুকরে উঠলো সমীরের আদরের শর্মি । মা’কে কাঁদতে দেখে ছোটো ছোটো দু’টো প্রাণ কচি কচি হাতে প্রাণপণে জড়িয়ে ধরলো তাদের মা-কে ।
এখন অপেক্ষা অনির পুরোপুরি সুস্থতার । সত্যি কি অনি মেনে নিয়েছে ডাক্তারের সবকথা ! ওর মন কি বলছে ! সব কল্পনা ! দেখা যাক সময় কি বলে ! তবে অন্য একজনের মনে কিন্তু বিঁধে রইল একটা কাঁটা – ‘এনগেজড টোন’ । উত্তর হাতড়ে চলেছে প্রিয়া ।