জিরো পয়েন্ট সাহিত্য আড্ডা
রবিবারের আড্ডা
————–১৯ এপ্রিল ২০২০ রবিবার—————
|| ফিরে দেখা ||
এই পৃথিবীতে যত জানা, যত বোঝা তা সবই অপরের জন্য। আমরা মোটেই নিজেকে বুঝতে চায়না। অপরকে বেশি করে বুঝতে গিয়ে নিজেকে আর জানা বোঝা হয়ে ওঠে না। অথচ এটাই সবথেকে বেশি প্রয়োজন ছিল আমাদের। – -সেখ আনসার আলি, জিরো পয়েন্ট-এর প্রতিষ্ঠাতা
কবিতাগুচ্ছ
বর্ষ বরণ
শিলাবৃষ্টি
বঙ্গের হল বর্ষপূর্তি
বিদায়ী সম্ভাষনে,
নগরীর আলো জ্বলে ওঠে ওই
বিদায় সন্ধিক্ষণে।
এসো তুমি এসো আগামী বর্ষ
আশা আকাঙ্ক্ষা নিয়ে
দুহাত পেতেছি মনকে বেঁধেছি
প্রবোধ বাক্য দিয়ে।
যাহা কিছু আছে উজাড়িব মোর
নতুন বর্ষ তরে,
বরণীব তব আগমন ক্ষনে
শঙ্খ বাজবে ঘরে।
সংকট আজ চরম আকার………
সমাজের মুখোমুখি
মহুয়া, মলুয়া, কাজলরেখারা
নয়তো মোটেই সুখী।
লাঞ্ছিতা হয় বেহুলার দল,
কাঁদে দেখো ফুল্লরা
ভাটিয়ালি আর ভাটিয়ালি নেই
হয়েছে সর্বহারা।
বাউল কীর্তন হারাতে বসেছে
নিজস্ব স্বকীয়তা;
প্রভাব ফেলেছে সবার ওপরে-
মার্কিনী সভ্যতা।
চেতনায় আজ আশাবাদ রাখি
আবার আসব ফিরে…
নানান সুতোয় নকশিকাঁথারা
অনেক স্বপ্ন ঘিরে।
বর্ষপূর্তি বর্ষবরণে
ভরসার্পূর্তি হোক,
আশা আর ভাষা থাক মোর সনে
সবাকার শুভ হোক।।
♥♥♥
মেঠো পথ বেয়ে
সুশান্ত পাড়ুই
যবে চলে যাব এ নক্ষত্রলোক ছাড়ি, জানি সেই ক্ষনে
শোকসংগীত ভাসিবে বাতাসে —এ পৃথিবী মুক্ত হয়ে,
কিছুদিন প্রেতাত্মার মতো—সেই চেনা নিমগাছ,
স্নিগ্ধ ফুলের সুবাস, শিশির ভেজা মাঠের ও-আল,
সর্বত্র আমির অস্তিত্ব, দেরি হবে খুঁজে পেতে।
সোনালী রোদ্দুর হতে মুঠো ভরি স্নেহ নিয়ে, জানি হয়তোবা
কিছুকাল খোলা মাঠে কলমির বনে, বিলের পাড়ে,
ছড়ানো স্মৃতিগুলো, পর্নমোচির পাতা খসানোর পালা,
মনে পড়ে? কচু পাতা হতে শিশিরের টুপ করে ঝরে পড়া,
চাতকেরা এখনও কি আকাশের কাছে বৃষ্টি চায়?
দিনশেষে গোধূলি বেলায়, বকেরা ফেরে কি নীড়ে?
ফুলের নির্যাস লয়ে মৌমাছি মৌচাকে ফেরে—
গোষ্ঠে ফিরে আসে একে একে গরুগুলো লয়ে রাখাল বালক,
মন্দিরে মন্দিরে বাজে শঙ্খ-ঘন্টার ধ্বনি, আহা!
হুতুম পেঁচারা চেয়ে রয় দিনের কঙ্কালের পানে।
এমনি কোনো ভোরে আবারো কখনও যদি
মরা গাছ হতে কাঠঠোকরা কোনো অবিরাম পোকা বাছে,
একটা শালিক উঠানে বেড়ায় ইতিউতি চেয়ে,
হয়তোবা মনে হবে আমি। নিশ্চিত তা নয় জেনো—
এ নিহারীকা ছাড়ি অন্য কোনো লোকে অদৃশ্য ভূমিতে লুটি।
নববর্ষে প্রার্থনা
হাস্নে আরা বেগম
জীবন যুদ্ধের ময়দানে
এসে গেলো নতুন সাল!
সব ধুয়ে মুছে যাক
ফিরে আসুক আগের হাল!
আম পাতা, চন্দন ধূপ
সব আজ কেমন নিশ্চুপ!.
আমের সবুজ ডালে.
বাডছে আম চুপি চুপি!
সময়ের নিষ্ঠুর কষাঘাতে
জীবন হয়েছে বহুরূপি.!
সময় চলবে আপন গতিতে
থাকবে না সে কোথাও থেমে!.
সবখানে তাকে দিতে হবে তাল
জীবনের প্রতিটি খেলায় নেমে!
আশার বিরুদ্ধে জাগবে আশা
সব হারিয়েও তৈরী হবে
নতুন রঙে অন্য ভালোবাসা!
নিষ্ঠুর শাসনে শেষ বসন্ত
জীবনতো হয় না অনন্ত !
তবুও জীবনের দীর্ঘশ্বাস
আতঙ্কিত সময়ের করাল গ্রাস!
কারো সাথে নেই কারো সাথ
মাঝমাঠে কাঁদছে মনের আঁতাত!
ধৈর্যের পরীক্ষার হোক শেষ
জীবন ফিরে পাক সাবলীল রেশ!
সবাই বলি যেনো এই আছি বেশ
ঘুরে দাঁডাক ধরণীর প্রতিটি দেশ!
♥♥♥
ঘুমের ঘোরে
মনোজকুমার রায়
মন যেন আজ আঁকছে ছবি।
ঘুমের ঘোরে দেখছে রবি।।
সাতসকালে খোকন উঠে।
লাঙ্গল নিয়ে মাঠে ছুটে।।
গোলকধাঁধায় পড়ল খোকা।
সবাই বলে ভীষণ বোকা।।
ঘুমের ঘোরে প্রলাপ বকে।
চমকে উঠে মাকে ডেকে।।
ডাক শুনে মা আসলেন তেড়ে।
ভূত চাপলো নাকি তোর্ গাঢ়ে।।
প্রতুত্তরে খোকা বলে, সবাই ভুয়ো।
স্বপ্ন দেখি।আমায় বলে গেঁয়ো।।
শুনরে খোকা গ্রাম থেকেই যে শহর
উঠে, আর শহর ছুটে নগরে।।
কেন্দ্র বিন্দু যে ঐ মেঠো পথে।
ঘুমের ঘোরে যাচ্ছে রথে।।
মা বলল,উঠ! খোকা যাবে আমার সাথে।
2 মন্তব্য
খুব ভালো উদ্যোগ। লেখাগুলোও বেশ ভালো। আরও সমৃদ্ধি কামনা করি।
অসাধারণ মেধা ও মননে তব যাত্রাপথ অটুট থাকুক।শুভকামনা