এম. কে. হিমু, মেমারিঃ লাল-ফিতে সাদা মোজা স্কুলের ইউনিফর্মের নীলাঞ্জনা নয় এরা, তবু নীল শাড়ী পরিহিত “নীলাঞ্জনা”, সাইকেলে করে শহরের রাস্তায় ঘুড়েতে দেখা যায়। এই লকডাউন চলাকালীন আমার-আপনার সুরক্ষার জন্য নিজেদের জীবন বাজি রেখে মেমারি পৌর এলাকার বাড়ি, বাড়ি খোঁজ খবর নিয়েছেন। কেউ বাইরে থেকে এসেছে কিনা, এসে থাকলে তার মধ্যে করোনার প্রাথমিক উপসর্গ দেখা দিয়েছে কিনা, প্রতিদিন সকালে তাদের খোঁজ খবর নেওয়া, তথ্য সংগ্রহ, রিপোর্ট তৈরি-সহ করোনা মোকাবিলায় নানা কাজ করছেন পুর-স্বাস্থ্যকর্মীরা। মেমারি পৌরসভার ১৬টি ওয়ার্ডে মোট ২০ জন “নীলাঞ্জনা” তাদের লকডাউনের সময় তাদের পরিবারের বাবা, মা, ভাই, বোন, স্বামী, বাচ্চাদের কথা না ভেবে মেমারি বাসীর সুরক্ষার জন্য নিরন্তর কাজ করে চলেছেন।
কিন্তু মাসিক ৩১২৫ টাকার বেতনভোগী এই স্বাস্থ্যকর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, লকডাউনের এক মাস বিনা মাস্ক, গ্লাভ্স নিয়ে কাজ করছেন মেমারি শহরের বুকে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ১০ লক্ষ টাকা বিমার আওতায় আনার কথা বলেছেন কিন্তু কোন স্পষ্ট নির্দেশিকা এখনও তারা হাতে পায়নি।
এমতাবস্থায় ঠিক লকডাউনের একমাস পর গত ২৩ এপ্রিল মেমারি পৌরসভা থেকে পুর-স্বাস্থ্যকর্মীদের হাতে আসে তাদের সুরক্ষার জন্য পিপিই কিট। মেমারি পৌরসভার পুরপিতা স্বপন বিষয়ীর নির্দেশে পৌরসভার আধিকারিক অজয় কুমার মন্ডল, সালেহা খাতুন, কৌশিক মোদক, মহর্ষী সেনগুপ্তর তত্ত্বাবধানে ২০ জন স্বাস্থ্য কর্মীদের হাতে পিপিই কিট তুলে দেওয়া হয়। পৌরসভা থেকে মনিষা চক্রবর্তী জানান যে, এই পিপিই (Personal Protective Equipment) কিটে সাদা সুরক্ষা চশমা, সম্পূর্ণ মুখা ঢাকা যায় এন-৯৫ মাস্ক, গ্লাভস, হেড কভার, সু কভার, বডি কভার সরঞ্জাম আছে।
আশার কথা মেমারি শহরে এখনও পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের কোন সংবাদ পাওয়া যায়নি। তবে লকডাউনের শুরু সময় অনেক মানুষ যারা বাইরে থেকে এসেছিলেন তাদের হোম কোয়ারিন্টনে থাকাকালীন প্রতিদিন এই একমাস ধরে পুর-স্বাস্থ্যকর্মীরা যেভাবে মেমারির প্রতিটি ওয়ার্ডে বাড়ি, বাড়ি গিয়ে তাদের খোঁজ নিয়েছেন নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তা অবশ্যই অভিনন্দন যোগ্য।
মেমারি বাসী জিরো পয়েন্ট ওয়েবসাইটে অনেক লকডাউন চলাকালীন অনেক খবরই পড়লেন, আসুন এবার মেমারি শহরে ২০ জন “নীলাঞ্জনা”র নাম পড়ে এই পৌর-স্বাস্থ্য কর্মীদের কিংবা করোনা যোদ্ধাদের জন্য ধন্যবাদ জানায়।
সুমিতা জানা, মাধবী নাথ, মাধবী মাল্লা, সাহানারা বেগম, নিপা নন্দী, টিঙ্কু দাস, ডলি সর্দ্দার, মিতালি দে, মাল্লা বাণু, পুষ্পা পন্ডিত, শকুন্তলা রায়, রাজিয়া সুলতানা, অর্চনা বাগ, পলি বাগ, কমলা মাঝি, অঞ্জলি বিশ্বাস, কল্পনা হাজরা, শীলা রায়, টুম্পা বাগ ও মৌমিতা পাল।