17/04/2024 : 8:59 AM
অন্যান্য

লকডাউনে বিকল্প পঠন-পাঠনের দিশা দেখাচ্ছে বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল হাই স্কুল

বিশেষ প্রতিবেদনঃ করোনার এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক জনজীবন এই মুহূর্তে বিপর্যস্ত। শিক্ষাক্ষেত্রেও এর প্রভাব এসে পড়েছে। দেশব্যাপী সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ, তাই একেবারে স্কুল স্তর থেকে কলেজ, ইউনিভার্সিটির সাধারণ পঠন-পাঠন বিঘ্নিত হচ্ছে। এই অবস্থাতে বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল হাই স্কুল তাদের ছাত্রদের পড়াশোনার সুবিধার্থে অনলাইন ক্লাসরুমের ব্যবস্থা করেছে। ইতিমধ্যেই তারা শ্রেণিভিত্তিক হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ বানিয়ে বিদ্যালয়ের প্রায় ৭৫ শতাংশ ছাত্রছাত্রীকে এই ক্লাসরুমের মধ্যে অন্তভুর্ক্ত করেছে। এখনও অনেক ছাত্র প্রতিদিন এই গ্রুপে যুক্ত হয়ে চলেছে। গত ১৫ ই এপ্রিল থেকে প্রাক প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর বিভিন্ন বিষয়ের ক্লাস শুরু হয়েছে। এই বিদ্যালয়ে প্রাথমিক বিভাগ(দিবা), পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা মাধ্যম চালু আছে। এছাড়াও প্রাথমিক বিভাগ(প্রাতঃ), পঞ্চম থেকে সপ্তম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগের ইংরাজি মাধ্যম চালু আছে। বিদ্যালয়ের প্রায় সকল শিক্ষক শিক্ষিকাই মূলত বিদ্যালয়ের ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে নিয়মিত ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার সহায়ক ভিডিও, অডিও, টেক্সট মেটেরিয়াল তৈরী করে দিচ্ছেন। এছাড়াও ছাত্ররা পড়শোনা বিষয়ক যে কোনো সমস্যার সমাধানের জন্য স্বতস্ফূর্তভাবে গ্রুপগুলিকে ব্যবহার করছে। ছাত্রদের সীমাহীন আগ্রহে এবং শিক্ষক শিক্ষিকাদের অসীম প্রচেষ্টায় এই ব্যতিক্রমী শিখন প্রক্রিয়া অনন্য নজির সৃষ্টি করছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে জানা গেছে, রাজ্য সরকারের নির্দেশমতো পশ্চিমবাংলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। এমতাবস্থায় বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা বাড়িতে বসে যাতে পড়াশোনার কাজ চালিয়ে যেতে পারে তার জন্যই এই বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এখনও পর্যন্ত প্রায় ১২০০ ছাত্রছাত্রী এই বিকল্প ক্লাসরুমে অংশগ্রহণ করেছে। যেহেতু বর্ধমান একটি মফস্বল শহর তাই যে সকল শিক্ষক শিক্ষিকারা পার্শ্ববর্তী গ্রাম থেকে যাতায়াত করেন তাঁদের ইন্টারনেটের অপ্রতুলতার জন্য তাঁরা এখনও এই অনলাইন ক্লাসে যুক্ত হতে পারেননি। অনলাইন ক্লাসগুলিকে ছাত্রদের সুবিধার্থে ‘বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল হাই স্কুল’-এর ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া হচ্ছে। সমগ্র উদ্যোগটি সফল করার জন্য বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রদের সংগঠন চিরন্তনীর সহযোগিতাও প্রশংসনীয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ড. শম্ভুনাথ চক্রবর্তীর কথায়, “আমরা দুশ্চিন্তায় ছিলাম- এতদিন ক্লাস বন্ধ থাকলে ছাত্ররা সব ভুলে যাবে তো! আমাদের স্কুলে আমরা একটা অ্যাকাডেমিক স্ট্যান্ডার্ড বজায় রাখার চেষ্টা করি। আধুনিক বিজ্ঞানের দৌলতে আমরা শ্রেণী শিক্ষণের মত করেই বিকল্প ক্লাস নিতে আরম্ভ করলাম। আমাদের টেকনিকাল নলেজের অপ্রতুলতার জন্য ইন্টারনেটের কাজগুলি আগ্রহ সহকারে করে দিচ্ছেন আমাদেরই প্রাক্তনী- সুদীপ্ত দাঁ, রাতুল দাস ও শুভজিৎ কোনার। আশাকরি আগামী দিনেও গ্রীষ্মের ছুটি, পূজার ছুটির মত দীর্ঘ অবকাশগুলিতেও একই ব্যবস্থা সাফল্যের সাথে কার্যকর করা যাবে।” প্রধান শিক্ষক মহাশয়ের আহ্বানে সাড়া দিয়ে প্রাথমিক বিভাগের(দিবা) ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শ্রী তাপস কুমার পাল এবং ইংরাজি মাধ্যম প্রাথমিক বিভাগের(প্রাতঃ) ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শ্রী শান্তনু ভুঁইয়া মহাশয়েরাও এই বিকল্প ক্লাস চালু করেছেন। অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র প্রণীল যশ আমাদের জানিয়েছে, “বিদ্যালয়ের অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে স্বাভাবিক ক্লাসের ঘাটতি অনেকটাই পূরণ হচ্ছে। এই ক্লাসগুলি করতে পেরে আমরা ভীষণ উপকৃত এবং খুশী।”

Related posts

লকডাউনের তৃতীয় দফাতেও অন্নদান সেবা চালু থাকবে বর্ধমানের গুরুদুয়ারে

E Zero Point

করোনা পরিস্থিতিতে ফেসবুক ডিজিটাল ক্লাস নিচ্ছে এস. এফ. আই.

E Zero Point

পূর্ব বর্ধমানে ভাতারের আবার করোনা পজিটিভঃ কিছুদিন আগে হরিয়ানা থেকে যুবক ফিরেছিলেন

E Zero Point

মতামত দিন