26/04/2024 : 8:39 AM
অন্যান্য

যেমন দেখি তাঁকে (চতুর্থ কিস্তি)

পরাগজ্যোতি ঘোষ:

শরীরটাকে শ্রীবিগ্রহের রূপ ভেবে অর্থাৎ ঈশ্বরের প্রতিমূর্তি ভেবে তাঁর পূজা করতে হয়। সেই পূজা করতে বসে আগে জানতে হয় কেমন করে আমি আমার স্বাস্থ্য কে সুস্থ রাখব সদাচারের মাধ্যমে। ‘করোনা’ পরিস্থিতি সারা বিশ্বের টনক নড়িয়ে দিয়েছে। যা খুশী খাব, যা খুশী পান করব, যেখানে-সেখানে -খাব আর চলবে না। হয় আপনাকে- শুদ্ধাচার মানতে হবে-না হয় আপনাকে-ভুগতে হবে। শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র বহু বছর আগে তাঁর শ্রীমুখ থেকে উৎসারিত বাণীর মাধ্যমে এই ‘স্বাস্থ্য ও সদাচার’ বিষয়ে নানা বাণী দিয়ে গেছেন।
এই বাণী গুলি থেকে কয়েকটি বাণী আজ আমি ব্যাখ্যা করা চেষ্টা করব। আমি বিশ্বাস করি এগুলি আপনাদের দৈনন্দিন জীবনে যদি আপনারা মেনে চলেন আপনাদের স্বাস্থ্য অবশ্যই ভালো যাবে।
শ্রী শ্রী ঠাকুর বললেন-
“অন্যের ছাড়া গামছা কাপড়
বিছানা কিংবা গায়ের চাদর,
বাজার করা নয় সমীচীন
সম্ভব স্বাস্থ্য হয় ক্ষীণ;
এসব গুলির ব্যবহার
স্বাস্থ্যের করে অপকার,
বেছে চলিশ এগুলি তাই
দুর্দশায় পাবি অনেক রেহাই।”
বাণী সংখ্যা ১৯
অযুশ্রুতি (স্বাস্থ্য ও সদাচার)
৩য় খন্ড
শ্রী শ্রী ঠাকুর বলতেন কখনও অন্যের ব্যবহার পড়া পোশাক-পরিচ্ছদ ব্যবহার করা উচিত নয়। অন্যের গামছা, পোশাক ইত্যাদি ব্যবহার করলে তার শরীরে থাকা জীবাণু রোগ আর একজনের হওয়া অসম্ভব কিছু নয়। তাই এই বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন থাকা উচিত। খুব ছেলেবেলা থেকেই পরিবার থেকে তাদের সন্তানদের এ বিষয়ে অবহিত করা প্রয়োজন। কিন্তু এটা অধিকাংশ পরিবারেই করা হয় না। বিশেষ করে গামছা ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রায় পরিবারেই দেখা যায় একই গামছা অনেকে মিলে ব্যবহার করেন। এটা যে কতটা মারাত্মক বিষয় তা আজ অনেকেই হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন।
শ্রী শ্রী ঠাকুর বললেন-
” যে কালে যে খাদ্য মেলে
স্বাস্থ্য সাথে মিল রেখে,
এমনভাবে খাবি কিন্তু
শরীর যেন ঠিক থাকে।”
বাণী সংখ্যা – ২০
(অনুশ্রুতি, ৩য় খন্ড,
স্বাস্থ্য ও সদাচার)
সব সময় টাটকা শাক সব্জী খাবার খাওয়া উচিত। সৃজন শাক সব্জী খেলে বেশি পরিমাণে ভিটামিন, প্রোটিন ইত্যাদি পাওয়া যায়। কিন্তু আমরা তা করি না। অসময়ের বেশি দাম দিয়ে শাক-সব্জী-ফল কিনি অথচ সময়ের জিনিস কিনি না এবং খাইনা। হলে শরীর খারাপ হয়। স্টোর জাত আনাজ পত্র যে ক্ষতিকারক তা আমরা উপলব্ধি করি না। আবার শুধু খেলেই হবে না। সেটা বিধি মাফিক খেতে হবে।
ঠাকুর বললেন –

” ক্ষুধা পেলে পেট পরিস তুই –
খাদ্যে দিয়ে তিনটি ভাগ,
শুদ্ধ জলে একভাগ পূরবেন
বৃদ্ধি পাবে অস্তরাগ।”
বাণী সংখ্যা – ২২
( অনুশ্রুতি, ৩য় খন্ড,
স্বাস্থ্য ও সদাচার)
খাবার সময় তিন ভাগ খাবার দিয়ে পূরণ করে এবং এক ভাগ জল দিয়ে পূরণ করতে হবে। এই বিধান মারলে শরীর স্বাস্থ্যে দীপ্ত রাগ সৃষ্টি হবে।

শ্রী শ্রী ঠাকুর বললেন –
” ত্যাজ্য যেটা তোমার পক্ষে-
হয়তো অন্যের পুষ্টি দেয়,
তুমি বাঁচ তাই নিয়েই তো
তোমার পক্ষে যেটা ন্যায়।”
বাণী সংখ্যা – ৩৮
(অনুশ্রুতি ৩য় খন্ড
স্বাস্থ্য ও সদাচার)
অনেক সময় একই খাবার একজনের পক্ষে উপকারী আবার সেটা অন্যের পক্ষে বিষবৎ। একজন মধুমেহ রোগী যদি সাধারণ মানুষের মতো যেটা তার পক্ষে নিষেধ সেটি খান তাহলে তার স্বাস্থ্য খারাপই হবে। তাই যে খাবার আমাদের শরীরের পক্ষে গ্রহণযোগ্য সেগুলিকেই আমাদের শুদ্ধাচারে গ্রহণ করতে হবে।
ঠাকুর বললেন –
” খাবার পাতে শেষ পাতেতে –
খাস যদি তুই নুনে-টকে, অনেক আপদ কাটবে তাতে
জানে অনেকে ঠকে ঠকে।”
বাণী সংখ্যা – ২৫
( অনুশ্রুতি ৩য় খন্ড
স্বাস্থ্য ও সদাচার)
প্রতি প্রত্যেকে যদি খাবার শেষ পাতে টক দই গ্রহণ করেন তাহলে খাদ্য খুব সুন্দর ভাবে হজম হয়। আর তাতে একটু লবণ দিতে হয়। পরিপাক ভালো হবার দরুন শরীর থেকে সুন্দরভাবে মলত্যাগ হয় এবং শরীরে একটা ফুরফুরে ভাব থাকে। অনেক রোগ বালাই দূর হয়ে যায়। এভাবে অসংখ্য বাণীর মাধ্যমে শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র ‘স্বাস্থ্য সদাচার’ বিষয়ে বলে গেছেন তাঁর মুখ থেকে। তাঁর বাণীগুলি যদি পাঠক মেনে চলেন তাদের উপকার-ই হবে। পরবর্তী সংখ্যায় আরও বাণী নিয়ে ফিরে আসবো। আপনার মতামত জানান আমাদের – আপনাদের Feed Back আমাদের পথ চলার পথে পরম পাথেয়।
( ক্রমশ:)

Related posts

মেমারি হাটপুকুরে বন্ধ অয়েল মিলের শ্রমিকদের পাশে বামপন্থী সংগঠন

E Zero Point

রেড জোন হাওড়ার টিকিয়া পাড়ায় কর্তব্যরত পুলিশবাহীনির উপর আক্রমণ

E Zero Point

বৈঠকে মাস্ক না পরায় থাই প্রধানমন্ত্রীকে জরিমানা

E Zero Point

মতামত দিন