25/04/2024 : 6:29 PM
আমার বাংলাদক্ষিণ ২৪ পরগনাদক্ষিণ বঙ্গ

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার থানগড়া গ্রামে সুপার সাইক্লোন আমফানের তান্ডবলীলা

পরাগজ্যোতি ঘোষ: দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার কাকদ্বীপ, নামখানা, সাগরদ্বীপ, পাথরপ্রতিমা ব্লকে সুপার সাইক্লোন আমফান সব লন্ডভন্ড করে দিয়েছে সোনালী ফসল পানগাছ। সব মাটিতে মিশিয়ে দিয়ে লন্ডভন্ড করেছে। এর ফলে পানচাষিদের খুব খুব ক্ষতি হয়ে গেছে। কাকদ্বীপ ব্লকের অন্তর্গত বাপুজী পঞ্চায়েতে দক্ষিণ থানগড়া ও উত্তর থানগড়া  গ্রামে সুপার সাইক্লোনের তাণ্ডবের চোখে দেখলে কান্না পেয়ে যাবে।

আমফানের দুর্যোগপূর্ণ রাতে ঐ গ্রামের উচ্চ বিদ্যালয় সতীশ চন্দ্র বিদ্যাপীঠে বাপুজী অঞ্চলের প্রধান সুভাষ গুড়িয়ার নেতৃত্বের পঞ্চায়েত মেম্বার সবিতা মণ্ডল, গ্রামের সভাপতি মাধব দাস, অনুপ মান্না এবং বিভিন্ন কর্মীদের সহযোগিতায় একটি রিলিফ সেন্টার করা হয়। এই সেন্টারে দুই গ্রাম মিলিয়ে প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ জন গ্রামবাসী আশ্রয় নেন ঝড়ের ঠিক পূর্ব মুহূর্তে। তাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেন মাধব দাস, অনুপ মান্না ও অন্যান্য কর্মীগণ। ঐ দুর্যোগ রাতে ঝড় বর্ষা মাথায় নিয়ে বাড়ি বাড়ি চাল ডাল আলু সংগ্রহ করে ওনারা গ্রামবাসীদের খাওয়ানোর ব্যবস্থা করে অসাধ্য সাধন করেন। পঞ্চায়েত মেম্বার সবিতা মণ্ডল এবং সভাপতি মাধব দাস বলেন গ্রামের পরিস্থিতি এখন কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। কিন্তু যা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা গত ৫০ বছরে এত ক্ষয়ক্ষতি হয়নি এমনকি আয়লায়ও এমন ক্ষতি হয়নি।

গ্রামের সভাপতি মাধব দাস বলেন পাশের গ্রামের রাইজিং সংঘ উত্তর থানগড়া শিশু শিক্ষা কেন্দ্র এবং উত্তর থানগড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় ঝড়ের তাণ্ডবে খুব ক্ষতি হয়েছে। সুপার সাইক্লোন গ্রামে যাদের মাটির ঘর টিনের ছাউনি টালির ছাউনি ছিল সব উড়িয়ে নিয়ে ফেলে দিয়েছে। এর ফলে ঘরবাড়ির ভীষণ ক্ষয়ক্ষতি হয়ে গেছে। দক্ষিন থানগড়া গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা ভক্তি পদ মন্ডলের গোয়াল ঘরের ছাউনি উড়িয়ে নিয়ে ফেলে দিয়েছে। আর ঐ গ্রামের বাসিন্দা অশোক মন্ডলের দোতলা পাকা বাড়ির উপরে এলবেসটার ছাউনি সম্পূর্ণ উড়িয়ে নিয়ে চলে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দা দেবপ্রসাদ মণ্ডল বলেন গ্রামের প্রায় বাড়ি খুব ক্ষতি হয়ে গেল। তিনি আরো বলেন আমাদের সোনালী ফসল পান গাছ গ্রামের প্রত্যেকটি বাড়ির প্রায় লোকেরা চাষ করেন। যা সারা বছর রুটি-রোজগারের সহায় সম্বল, তা ভীষণভাবে ক্ষতি হয়ে গেছে। কাদা মাটির সঙ্গে পানগাছ সব মিশে গেছে।

দেবপ্রসাদ মণ্ডল বলেন কোভিড-১৯ এর ফলে ৫০ – ৬০ দিনের লকডাউনে পান মার্কেটও সম্পূর্ণ লকডাউন ছিল। ফলে পানপাতা কেনাবেচা হয়নি। এর ফলে প্রত্যেকটি পান মাচাতে পানপাতা প্রচুর লোড হয়ে ছিল, সেগুলি সম্পূর্ণ কাদা মাটির সঙ্গে মিশে গেছে প্রায় নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম। এই পানমাচা আবার নতুন করে দাঁড় করাতে খুব খরচ হবে। সেই খরচ বহন করা বেশির ভাগ চাষির পক্ষে সম্ভব নয়। কারণ বাঁশ-কাঠের দাম দ্বিগুণ হয়ে গেছে। তিনি বলেন এই খরচ ব্যয় বহুল যা উনাদের মত চাষীদের পক্ষে সামাল দেওয়া অসম্ভব। তিনি বলেন যদি সরকার থেকে কিছু আর্থিক সাহায্য মেলে তাহলে খুব উপকৃত হবেন বহু চাষী।

Related posts

বর্ধমানে এসএফআই-এর শিক্ষা সামগ্রী দান ও বিপ্লবী চে গুয়েভারা জন্মদিন পালন

E Zero Point

বর্ধমান শহরে করোনা সংক্রমণ কমলো, আক্রান্ত ৭৮, জেলায় ৩২৯

E Zero Point

রাজ্যে সরকার নয় সার্কাস চলছে, সাতগেছিয়ায় বাম নেত্রী মীনাক্ষী মুখার্জী

E Zero Point

মতামত দিন