আলেক শেখ, কালনা, ১৯ জুনঃ লাগাতার সংগঠিত আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শুক্রবার নিজেদের দাবি আদায় করলেন পূর্বস্থলীর পাওয়ারলুমের চার হাজার শ্রমিক। এদিন পূর্বস্থলী-১ বিডিও দপ্তরে অনুষ্ঠিত ত্রিপাক্ষিক আলোচনার মধ্য দিয়ে শ্রমিকদের দাবি মেনে নিয়ে চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন– পাওয়ারলুম মালিক, শ্রমিক নেতৃত্ব এবং প্রশাসনের অধিকারীক বৃন্দ। প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্বাক্ষর করেন–পূর্বস্থলী-১ বিডিও, লেবার কমিশনার এবং হ্যান্ডলুম অফিসার। উল্লেখ্য লকডাউনের অজুহাতে জুন মাসের প্রথম দিকে শ্রমিকদের মজুরি কমিয়ে দেন পাওয়ারলুম মালিকরা। তারই প্রতিবাদে সিআইটিইউ অনুমোদিত পূর্ব বর্ধমান জেলা তাঁত শ্রমিক ইউনিয়নের পতাকা নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন শ্রমিকরা। শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রেখে পাওয়ারলুমগুলির সামনে বিক্ষোভ দেখায় | এলাকায় তারা সিআইটিইউ-এর পতাকা নিয়ে মিছিলও করেন। এই আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে পূর্ব বর্ধমান জেলা তাঁত শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে পূর্বস্থলী-১ বিডিও দপ্তরে বিক্ষোভ ও বিডিওকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। দাবি করা হয়– লকডাউনের অজুহাতে কোনভাবেই মজুরি কমানো যাবে না। পাওয়ারলুম শ্রমিকদের এই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে অন্য এলাকাতেও। সেই আন্দোলন আরো জোরদার করার লক্ষেই গত ৮ই জুন পূর্বস্থলী-১ ব্লকের ফকীরতলায় তাঁত শ্রমিকদের বিরাট সভা অনুষ্ঠিত হয় | সভায় বক্তব্য রাখেন– পূর্ব বর্ধমান তাঁত শ্রমিক ইউনিয়নের জেলা সম্পাদক তাপস চ্যাটার্জী, সিটুর পূর্ব বর্ধমান জেলা সম্পাদক সুকান্ত কোনার, বাম বিধায়ক প্রদীপ কুমার সাহা, অলোক দেবনাথ প্রমুখ। তাঁরা এই আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে বক্তব্য রাখেন। ওই দিনই সভা শেষে শ্রমিকরা মিছিল করে এলাকা পরিক্রমার পর পূর্বস্থলী-১ ব্লক দপ্তরের সামনে গিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মালিকদের নিয়ে ত্রিপাক্ষিক আলোচনায় বসার আশ্বাস দিলে অবরোধ উঠে যায়। সেই আশ্বাস মোতাবেক শুক্রবার হল সেই ত্রিপাক্ষিক আলোচনা সভা। সিআইটিইউ-এর পূর্ব বর্ধমান জেলা সম্পাদক সুকান্ত কোনার বলেন– শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে চরম প্রতিকূলতার মধ্যেই আন্দোলনে জয় পাওয়া যায়। আজ তা প্রমাণিত হল। এই আন্দলনের ধারা অন্য স্থানে ও অন্য ক্ষেত্রেও ছড়িয়ে দেওয়া হবে।