রূপাঞ্জন রায়ঃ
আজ ২৯শে জুলাই ভারতবর্ষের নবজাগরণের বলিষ্ঠ প্রতিনিধি, পার্থিব মানবতাবাদের প্রবক্তা, অক্ষয় মনুষ্যত্বের অধিকারী ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরের ১৩০তম স্মরণ দিবস । ১৮৯১সালের ২৯শে জুলাই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। একই সাথে এই বছর বিদ্যাসাগরের দ্বি-শত জন্মবার্ষিকী চলছে।অজ্ঞানতার নিকষ কালো অন্ধকার ও ধর্মীয় কুসংস্কারের বেড়ি থেকে ভারতবাসীকে মুক্ত করার জন্য তিনি আজীবন নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন। তিনি বলতেন , ” মানুষ অনাহারে মরবে, ব্যাধি জরা মহামারীতে উজাড় হয়ে যাবে, আর দেশের মানুষ চোখ বুজে ‘ভগবান’ ‘ ভগবান’ করবে– এমন ভগবৎ প্রেম আমার নেই। আমার ভগবান আছে মাটির পৃথিবীতে।” গরীব অসহায় মানুষের চোখের জল,তাদের দুর্বিসহ জীবন- যন্ত্রণা সমস্ত বড় মানুষকেই গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে। কিন্তু গরিব মানুষের প্রতি বিদ্যাসাগরের ভালোবাসা ও দরদবোধটা ছিল সম্পূর্ণ অন্য জাতের। মনের বিশালতা, হৃদয়ের ব্যাপকতার পাশাপাশি গরিব মানুষের প্রতি বিদ্যাসাগরের ছিল নাড়ির টান। তিনি বলেছিলেন, “দরিদ্রের দুঃখ কয়জন দেখিয়াছে, তাহাদের হৃদয়ের ব্যথা কয়জন বুঝিয়াছে ! যে ব্যক্তি যে দেশে জন্মগ্রহণ করেন, সে দেশের হিতসাধনে সাধ্যানুসারে সচেষ্ট ও যত্নবান হওয়া তাহার পরম ধর্ম ও তাহার জীবনের সর্ব প্রধান কর্ম।”
আজ তাঁর স্মরন দিবসে আমাদের শপথ নিতে হবে, মনুষ্যত্ব রক্ষার সংগ্রামে আমরা যেন ব্রতী হই। শিক্ষা-সংস্কৃতি ও নীতি-নৈতিকতার উপর যখনই আঘাত আসবে আমরা যেন রুখে দাঁড়াতে পারি। আমরা যেন মানব মুক্তির লক্ষ্যে সামনের দিকে আরো এগিয়ে চলতে পারি।