জিরো পয়েন্ট নিউজ – আলেক শেখ, কালনা, ১ সেপ্টেম্বর ২০২০:
কয়েকদিন হল পূর্বস্থলী এক নম্বর ব্লকের জালুইডাঙার ভাগীরথী নদী ভাঙ্গন রোধ-এর কাজ শুরু হয়েছে। রাজ্য সরকারের সেচ দপ্তরের বরাদ্দ করা ৪২ লক্ষ টাকা দিয়ে ফেলা হচ্ছে বাঁশের খাঁচা ও বালির বস্তা। এই কাজ দেখে খুশি নয় এলাকার বাসিন্দারা। নদী ভাঙ্গনের চির অভিজ্ঞতা থেকে বাসিন্দারা বলছেন, এক বছরের মধ্যেই সব ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যাবে। আবার পরের বছর যে ভাঙ্গন ছিল তা অব্যাহতই রয়ে যাবে। কি লাভ হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা জলে ফেলে? প্রশ্ন এলাকাবাসীর। উল্লেখ্য ব্যান্ডেল রেললাইনের নবদ্বীপ ও সমুদ্রগর রেল ষ্টেশনের মাঝে জালুইডাঙ্গা গ্রামে কিছুদিন আগে ব্যাপক নদীভাঙন দেখা দেয়। পাড় ভাঙতে ভাঙতে রেললাইনের থেকে নদী মাত্র ২০ মিটারের দূরে চলে আসে। রেললাইন নদীগর্ভে চলে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। ফলে দক্ষিণবঙ্গের সাথে উত্তরবঙ্গের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা তৈরি হয়। শুধু রেলই নয়, স্থানীয় শ্মশানে যাওয়ার ঢালাই রাস্তাটি ভাঙতে শুরু করে । তাই দ্রুত এই ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি ওঠে। সেই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সরকারের সেচ দপ্তরের বাশের খাঁচা ও বালির বস্তা ফেলা শুরু করে। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি বাঁশের খাঁচা ও বালির বস্তা দিয়ে ভাঙ্গন প্রতিরোধ করা যাবেনা। তাদের দাবি যে সঠিক, এই স্থান থেকে কিছুটা দূরে কাবাডি গ্রাম কালিনগরের ভাঙ্গনের অভিজ্ঞতায় তার প্রমাণ দিচ্ছে। কালিনগর গ্রামে বালির বস্তা দিয়ে নদীপাড় বাঁধাইয়ের কাজ করা হয় গত জুলাই মাসে। কিন্তু এক মাসের মধ্যেই আবার নদী ভাঙ্গন শুরু হয় এই গ্রামে। কালনা এক নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির অন্তর্গত কালিনগর গ্রামে ইতিপূর্বেও পাকাপাকিভাবে ভাঙ্গন সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করা হয়নি বলে গ্রামবাসীদের অভিযোগ। পাকাপাকিভবে ভাঙ্গনের সমস্যা সমাধান না করে লোক হাসানো কিছু প্রকল্প নেওয়া হয়। ভাঙ্গন প্রতিরোধে একবার ভেটিভার নামক ঘাস লাগিয়ে দেওয়া হয় নদী পাড়ে । বলা হয় এই ঘাসই নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধ করবে । কিন্তু যে বছর ঘাস লাগানো হয়, সেই বছরই সেই ঘাস ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যায় । তারপর নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে ফেলা হয় বাঁশের খাঁচা । সেই বাঁশের খাঁচাও ধুয়েমুছে সাফ হয়ে যায় এক বছরের মধ্যে। তারপরে গত জুলাই মাসে বালির বস্তা দিয়ে নদীপার বাঁধানো হয়। কিন্তু ভাঙ্গন আজও অব্যাহত কালীনগরে। তাই জালুইডাঙ্গায় নদীভাঙনের ভবিতব্য কালিনগরের মতই হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই বিশ্বাস এলাকার প্রাক্তন বাম বিধায়ক ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতা রতন দাসেরও। তিনি বলেন এলাকার মানুষের ভিটেমাটি ও রেললাইন রক্ষার্থে জালুইডাঙ্গায় পাকাপাকিভাবে নদী ভাঙ্গন রোধের কাজ করা হোক।