জিরো পয়েন্ট নিউজ ডেস্ক, ৫ মে ২০২১:
প্রসিদ্ধ বিজ্ঞান জার্নাল নেচারের এক রিপোর্টে জানা গেছে যে, করোনা ভাইরাস নিয়ে বৈজ্ঞানিকদের উপদেশ ভারত ও ব্রাজিল এই দুই দেশ মেনে চলেনি তাই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। যদি বৈজ্ঞানিকদের উপদেশ এই দুটি দেশের সরকার মেনে চলতো তাহলে করোনার ভয়বহতা অনেকটাই কম হতো।
গত সপ্তাহে ভারতে করোনায় ৪ লাখের বেশি মানুষ সংক্রমিত হয়েছে। ৩৫০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে করোনায়। এই ভয়াবহতার ফলে বিভিন্ন দেশ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। দেশে অক্সিজেন, ভেন্টিলেটর, আইসিউ বেডের অভাব ঘটছে।
নেচারের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে ভারত ও ব্রাজিলের মধ্যে দূরত্ব ১৫ হাজার কিলোমিটার কিন্তু করোনা নিয়ে দুই দেশের সমস্যা একই। দুটো দেশের সরকারই বৈজ্ঞানিকদের উপদেশ মানেনি। ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি জায়র ব্লোসনারে বারবার কোভিড-১৯কে সাধারণ ফ্লু বলেছেন। ব্রাজিল সরকার মাস্ক ও সামাজিক দূরত্ব দেশে বাধ্যবধকতা করেনি।
অন্যদিকে নেচারে বলা হয়েছে, ভারত সরকার বৈজ্ঞানিকদের উপদেশ সময়মতো মানেননি। যার ফলে করোনার তীব্রতায় মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। দেশে নির্বাচন ও ধর্মীয় সমাবেশে প্রচুর মানুষের সমাবেশ হয়েছে যেখানে করোনার কোন বিধি মানা হয়নি। ঠিক এরকম আমেরিকার পূর্ব রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রম্পও বৈজ্ঞানিকদের উপদেশ মেনে না চলায় আমেরিকাতে ৫-৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে – যা করোনায় মৃত্যুর নিরিখে প্রথম।
নেচার জার্নালে বলা হয়েছে, গত বছর সেপ্টেম্বরে ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যার সবথেকে বেশি ছিলো। তারপর ২০২১ এ মার্চে অনেকটাই কমে যাওয়ার পর ভারত সরকার আত্মসন্তুষ্টিতে ছিলেন। তাই সব কিছুই দেশে স্বাভাবিক করে দিয়েছিল। মানুষ ভিড় জমিয়েছে অনিয়ন্ত্রিতভাবে। মানুষ মাস্ক পরেননি ও সামজিক দূরত্ব মানেননি। রাজনৈতিত মিছিল, সমাবেশ, ধর্না, ধার্মিক আয়োজন সবই হয়েছে করোনা বিধি না মেনে। ফলে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেসামাল হয়ে পরেছে।
নেচারে আরও বলা হয়েছে, দেশের বৈজ্ঞানিকরা রিসার্চের জন্য করোনার তথ্য সঠিক ভাবে সংগ্রহ করতে অক্ষম হয়েছে। করোনা পরীক্ষার তথ্য, হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল টেষ্টের তথ্যের মধ্যে সামঞ্জস্য থাকে না, সরকার ও বৈজ্ঞানিকদের মধ্যে তথ্যের আদানপ্রদান সঠিক হওয়া দরকার। ভারতের প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা কৃষ্ণস্বামী বিজয়রাঘবন এই অসুবিধার কথা স্বীকার করে নেন।
নেচারের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয় যে, দুবছর আগে মোদী সরকারের কাছে লিখিত ভাবে এই তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছিল। এই তথ্য তখন জানতে চাওয়া হয়েছিল যখন ন্যাশানাল স্ট্যাস্টিটিকল কমিশন থেকে কিছু উচ্চ আধিকারিক ইস্তাফা দিয়েছিলেন এই কারণে যে সরকার সম্পূর্ণ তথ্যের বিশ্লেষণ করতে দিচ্ছে না এই অভিযোগ করে। বৈজ্ঞানিক ও দেশের সরকারের মধ্যে যদি তথ্যের আদান প্রদান সঠিক ভাবে হতো এবং বৈজ্ঞানিকদের উপদেশ যদি সরকার মেনে চলতো তাহলে আজ করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেসামাল হতে হতো না ভারত ও ব্রাজিলকে।