27/04/2024 : 8:16 PM
আমার বাংলাদক্ষিণ বঙ্গপূর্ব বর্ধমানমেমারি

শ্বেত বিপ্লবের জনক কৃষক বন্ধু ড. ভার্গিস ক‍্যুরিয়ানের ১০১ তম জন্ম দিবস মেমারিতে

জিরো পয়েন্ট নিউজ,  এম. কে. হিমু, ২৬ নভেম্বর ২০২২:

আজ ভারত দুগ্ধ শিল্পে সাফল্যের চুরান্তে রয়েছে। কিন্তু কয়েক দশক আগেও ভারতের চিত্রটা ছিল একদম ভিন্ন। সালটা ১৯৪৯। তখনও ইংরেজদের দ্বারা ক্রমাগত শোষিত হচ্ছে দেশের কৃষক সমাজ । যখন দেশের অধিকাংশ কৃষক দুবেলা দুমুঠো খেতে পারছে না,ঠিক তখনই গুজরাটের আনন্দ শহরে, এক দুধ সমবায় সমিতিতে কাজ শুরু করেন ২৮ বছরের এক যুবক।ধীরে ধীরে হয়ে উঠলেন কৃষকদের মাসিহা।বদলে দিলেন গোটা দেশের চেহারা।দেশে আনলেন এক ‘আমুল’ পরিবর্তন।যা পরবর্তিকালে শ্বেত বিপ্লবের আকার নেয়।তিনি ভার্গিস কুরিয়েন।

১৯২১ সালের ২৬ নভেম্বর কেরালার এক খ্রিস্টান পরিবারে জন্ম কুরিয়েনের । পদার্থ বিদ্যায় বি.এসসি ডিগ্রি কমপ্লিট করার পর সরকারী বৃত্তি নিয়ে আমেরিকা চলে যান, মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং পরার জন্য। পড়াশোনা শেষ করে, ভারতে ফিরে আসেন ডঃ কুরিয়েন।ভারতে ফিরে,চুক্তি অনুযায়ী গুজরাটের কয়রা জেলার আনন্দ শহরে একটি দুগ্ধ সমবায় সমিতিতে কাজ শুরু করেন। দুধ উৎপাদনে ভারতকে বিশ্বের শীর্ষস্থানে পৌঁছে দিয়েছিলেন শ্বেত বিপ্লবের জনক ভার্গিস কুরিয়েন।

দুধের ঘাটতি দেশ থেকে বিশ্বের বৃহত্তম দুধ উত্পাদক দেশে পরিণত করেছিলেন। তাঁর নেতৃত্বেই গঠিত হয়েছিল জাতীয় দুগ্ধ উন্নয়ন বোর্ড । যা সারা দেশে দুগ্ধ সমবায় আন্দোলন গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। ডঃ কুরিয়েন আনন্দ মিল্ক ইউনিয়ন লিমিটেডের একটি অন্য নাম দিতে চেয়েছিলেন যা সহজেই উচ্চারণ করা যায় । তখন সমবায়ের এক কর্মচারী “আমুল” নামটি সুপারিশ করেন।সংস্কৃত শব্দ অমূল্য থেকে আসে আমুল। নামটি মনে ধরে যায় কুরিয়েনের। এভাবেই শুরু হয় আমুলের পথচলা।

শ্বেত বিপ্লবের ( দুগ্ধ চাষীদের উন্নয়ন সংক্রান্ত আন্দোলন ) জনক ড. ভার্গিস ক্যুরিয়ানের ১০১ তম জন্ম দিবস উপলক্ষ্যে মেমারির শ্রীদুর্গা হিমঘরে বিবিধ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এদিন প্রথমেই ড. ভার্গব ক্যুরিয়ানের আলোকচিত্রে মালা ও ফুল অর্পনের মধ্য দিয়ে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে যাবতীয় অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। আমূল কোম্পানীতে কর্মরত ৬০ জন কর্মী শ্রীদুর্গা হিমঘর থেকে বাইক র্যালি শুরু করে দেবীপুর এলাকার একটি দুগ্ধ সমবায় কেন্দ্র ও স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে পৌঁছন। সেখানে উপস্থিত ছাত্রছাত্রীদের সামনে শ্বেত বিপ্লব ও ড. ক্যুরিয়ানের চিন্তাধারা বক্তব্যের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আমূল কোম্পানীর একাধিক পদাধিকারী কর্মী ও মেমারি আমূল দুগ্ধ প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রের কর্মীগণ। এলাকার দুগ্ধ চাষীরাও অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দীপক চক্রবর্তী, মৃণালকান্তি মজুমদার, বিশ্বরুপ রায়, অর্ঘ দাস, অভিজিত শীল।
আমুল এর পক্ষ থেকে মৃণাল কান্তি মজুমদার বলেন। এলাকার কৃষকদের সঙ্গে প্রাণিসম্পদ গো-খাদ্য সহ বিভিন্নভাবে দুধ উৎপাদন ক্ষমতাকে বাড়ানোর জন্য বিশেষ আলোচনা বৈঠক করা হয়েছে। আমূল দুধ এখন গোটা ভারতে ব্যবসা করছে। তাই তাদের চাষিরাই এখন মূল সম্পদ এই চাষীদের সমস্ত রকম ভাবে পাশে থাকার ও আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানা যায।
এছাড়াও তিনি বলেন আগে দুধ বিক্রেতারা দালালের মাধ্যমে দুধ বিক্রি করতো কিন্তু এখন ডায়রেক্ট কোম্পানীতে দুধ বিক্রি করছেন, কোম্পানী দুধবিক্রেতাদের অ্যাকাউন্টে ডায়রেক্ট পেমেন্ট করে দেয় এতে লক্ষ লক্ষ দুধ বিক্রেতা উপকার পাচ্ছে।


Related posts

অবলুপ্তপ্রায় বাদাই গানের আসর

E Zero Point

মেমারির গন্তারে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির

E Zero Point

বর্ধমানে প্রশাসনিক বৈঠকের পর বিক্ষোভের মুখে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, চাকরির আশ্বাস দেওয়া হয়

E Zero Point

মতামত দিন