জিরো পয়েন্ট বিশেষ প্রতিবেদন, ২৫ অক্টোবর ২০২৪ :
কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে কালীপুজোর আয়োজন করা হয়। এই পুজোকে কোথাও দীপান্বিতা কালীপুজোও বলা হয়। কোথাও আবার মহানিশা নামেও এই কালীপুজোর রাত পরিচিত। এই রাতে শক্তির আরাধনা হয়। দুর্গাপুজোর পর বাঙালির সবচেয়ে বড় পূজো কালীপুজো। আর স্বাভাবিক ভাবেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলার শহর গ্রামে ছড়িয়ে আছে কালীপুজোর বিভিন্ন ঐতিহ্য।
পূর্ব বর্ধমান জেলার মেমারি ১ ব্লকের অন্তর্গত আমাদপুর গ্রামে ৪০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কালী পুজো হয়ে আসছে। কথিত আছে এই গ্রামে থাকেন কালী ঠাকুরের ৪ বোন। বড়মা, মেজমা, সেজমা, ছোটমা। মেমারি রেলওয়ে স্টেশন থেকে ৫ কিমি দূরে ঐতিহ্যময়ী গ্রাম আমাদপুরে দুর্গাপূজো সেরকম না হলেও মা কালীর চার বোনকে ঘিরে উৎসবে মেতে ওঠে পুরো গ্রাম। পুজোর দিন সারা রাত দূরদূরান্ত থেকে মানুষ পুজোয় অংশগ্রহণ করতে আসেন।মশাল জেলে আজও বিসর্জনের রেওয়াজ রয়েছে, এমনকী চার বোন বিসর্জনের সময় মিলিত হয় একসাথে।
বড়মা, মেজমা, সেজমা, ছোটমা ছাড়াও আমাদপুরে শতাধিক কালীপুজো হয়। পুজোর রাত ছাড়াও বিসর্জন দেখতে ছুটে আসে আসে পাশে গ্রাম তথা শহরের মানুষ। বিশাল শোভাযাত্রা সহ কারে কালী ঠাকুরের বিসর্জন হয় ভোরবেলা।
জানা যায়, এক সময় আমাদপুর দিয়েই প্রবাহিত হল বেহুলা নদী। সেই সময় ব্যবসার জন্য বণিকরা নৌকায় যাতায়ত করত এই বেহুলা নদী দিয়ে। ফলে ধনী বণিকদের ডাকাত, দস্যুদের কবলে পড়ে সর্বস্ব খোয়াতে হত। গ্রামের শেষ প্রান্তে বেহুলা নদীর তীরে ছিল মহাশ্মশানে এক সাধু থাকতেন। তিনি কালীসাধনা করতেন। ধনী বণিকরা ডাকাতের হাত থেকে রক্ষা পেতে সেই শ্মশানে কালী মায়ের পুজো দিতেন। তখন থেকেই এই দেবীর প্রতি বিশ্বাস জন্মায়। দেবীর মাহাত্ম্য ছড়িয়ে পরে দিকে দিকে। বর্তমানে বড় মা নামে পূজিত হয় সেই দেবী।
আমাদপুর গ্রামে ঢুকলে প্রথমেই প্রায় ২০ ফুট উচ্চতার বড় মায়ের দর্শন পাওয়া যাবে। তারপরেই মেজ মা। কিছুটা দূরে সেজমা ও তারপর ছোটমায়ের মন্দির। এলাকার স্থানীয় মানুষের তত্ত্বাবধানে বড়মা, মেজমা, সেজমা, ছোটমা পূজিত হন।