অনু গল্প
সোনালীদের জামাই ষষ্ঠী
মুহাম্মদ ইসমাইল
বড়ো সাধ করেই বিয়েটা দিয়েছিলাম। কে জানতো কপালে এতো দুঃখ আছে। সোনালীর মা কথাটা বলতে বলতে কেঁদে ফেলল।
একমাত্র মেয়ে সোনালীর বিয়ে হয় পাশের গ্রামের মোড়ল সুমন ওঝার ছেলে যতিনের সাথে। অবস্থা ভালোই। মেয়ে সুখে থাকবে এটা সব বাবা মা ই চাই।
বিয়ের দুই তিন মাস পর থেকে অশান্তি শুরু।দেনা পাওনার হিসেব। গরীব বলে এটা সেটা কত্তো কথা শুনতে হয় সোনালীকে। বছরে একবার জামাইষষ্ঠী। তাতে ও ভিখারির মতো আচরণ … ইত্যাদি ইত্যাদি।
এবারেও সাধ্যমতো চেষ্টা করেছে জামাই ষষ্ঠীতে জামাইয়ের মন ভরাতে। নতুন পোশাক, ভিন্ন স্বাদের রান্না পোলাও, মটন বিরিয়ানি, কচু চিংড়ি , দই, মিষ্টি, বাহারি ফলমূল। কিন্তু মন যার তেতো, কোনো মধু মিষ্টিতেই তা মিষ্ট হবে না।
অনেক বলে কয়ে জামাই এসেছে । অন্তরের পবিত্র ভালোবাসা দিয়ে কেনা পোশাক গুলো জামাই এর হাতে তুলে দিতেই —
“একি! আমাকে কি ভাবেন? আমি কি ফকির? এই ফুটপাতের পোশাক আমি পরবো! আমার বাড়ির চাকররা তো এ-র চেয়ে দামি পরে।”
—–সোনালীর মা বিনীতভাবে বলল –“দেখো বাবা,আমাদের সাধ্যমতো ভালো কাপড় কিনেছি।তুমি গ্রহণ করলে আমরা খুশি হবো। “
–যতীন কিছু না বলে বেরোতে যাচ্ছিল, সোনালী থামিয়ে দিয়ে বলল –“আজকে আমি তোমার জন্য নতুন নতুন রান্না করেছি। একটু খেয়ে যাও।”
যতিন বিরিয়ানির থালা থেকে এক চামচ মুখে দিতেই —
“ওয়াক্ থু! এ কি রান্না করেছো? এটা বিরিয়ানি হলো? যত্তসব……” যতিন রেগেমেগে বেরিয়ে যায়।
হায় রে কপাল!হায় রে সুখ! সোনালী ও সোনালীর মা হাঁউমাঁউ করে কেঁদে একে অপরকে জড়িয়ে ধরলো… ..। ♥