17/04/2024 : 4:51 AM
আমার দেশ

অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিঃ ভারত-চীন যুদ্ধ প্রায় অবধারিত

পার্থসারথী তাপস


বর্তমানে এল.এ.সি.তে যা অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তাতে ভারত-চীন যুদ্ধ প্রায় অবধারিত।এই যুদ্ধ কত বড় আকার নেবে এখনই বলা সম্ভব হচ্ছে না। তবে যা পরিস্থিতি তাতে বোঝা যাচ্ছে বিশ্ব জুড়ে করোনা ছড়ানোর পর, যখন ভারত কোভিডের প্রকোপে ভয়ানক ব্যতিব্যস্ত, চিকিৎসা এবং লকডাউনের ফলে অর্থনীতি যথেষ্ট দুর্বল, ভারতের ফাইটার স্কোয়াড্রন লেভেল সর্বকালীন নীচে তখন এই পরিস্থিতিতে চীন এই সুযোগ কখনোই হাতছাড়া করতে চায় না। অনুমান করা যেতে পারে এই দিনের জন্যই হয়তো পৃথিবী ব্যপী তারা তাদের কোভিড ষড়যন্ত্রকে রূপ দিয়েছিল। তাদের পক্ষে অত্যন্ত অনুকূল পরিস্থিতিতে যেনতেন প্রকারেণ ভারতকে যুদ্ধে জড়াতে বা চাইনিজ হেজিমনির সামনে ভারতকে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করাতে তারা ভয়ানক রকম উদগ্রীব।

অনেকের মনেই প্রশ্ন এই যুদ্ধ কি পরমাণু যুদ্ধের আকার নিতে পারে? আমার মনে হয়, না। কারণ দুই দেশই জানে দুই দেশের যা বিশাল পরমাণু ভান্ডার তাতে নিউক্লিয়ার লেভেলে যুদ্ধ হলে কোনো দেশই জয়ের মালা বা পরাজয়ের লজ্জা বরণ করে নেওয়ার জন্য পৃথিবীর বুকে অস্তিত্বশীল থাকবে না। তাছাড়া ভারতের নো ফার্স্ট ইউজ পলিসি চীনকে আশ্বাসে রেখেছে ভারত পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করবে না।দুই দেশের পরমাণু অস্ত্রসম্ভারই এই যুদ্ধকে পরমাণু যুদ্ধের রূপ নিতে ডেটারেন্ট হিসাবে কাজ করবে।


সুতরাং এটা বলাই যায় এই যুদ্ধ তা যেমন আকারেরই হোক না কেন কনভেনশনাল যুদ্ধই হবে। এবং সেই কনভেনশনাল যুদ্ধে ভারতকে লজ্জাজনকভাবে পরাস্ত করে পৃথিবীর বুকে সুপার পাওয়ার হিসাবে জায়গা করে নেওয়াই চীনের শাসক চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টির মূল লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যেই একটু একটু করে ভারতের জমি দখল করে ভারতকে কোনঠাসা করে শান্তিপ্রিয় দেশ ভারতকে যুদ্ধে যেতে বাধ্য করার কৌশল নিয়েছে তারা। চীন জানে এশিয়ার বুকে বর্তমানে তাদের একচ্ছত্র আর্থিক এবং ভূরাজনৈতিক সাম্রাজ্যবাদ প্রসারের পথের প্রধান কাঁটা ভারত। তাই ভারতকে শায়েস্তা করে তারা এশি্যায় একচ্ছত্র অধিপতি এবং পৃথিবীর বুকে সুপার পাওয়ার হিসাবে জায়গা করে নিতে চায়। আর একটা কারণ বর্তমানে আমেরিকার ক্লোজ অ্যালাই ভারতকে শায়েস্তা করা গেলে আমেরিকাকেও শিক্ষা দেওয়া যাবে এবং এবং ইউনিপোলার বিশ্ব একটি দ্বিতীয় পোল হিসাবে সবার স্বীকৃতি আদায় করে নেবে, যা ইউনিপোলার বিশ্বকে পুনরায় বাইপোলার বিশ্বে পরিণত করবে। তাদের এই আন্তর্জাতিক উচ্চাকাঙ্খার কারণেই উভয় দেশের শান্তি আলোচনা হাফ সেঞ্চুরি ছুঁই ছুঁই হয়ে গেলেও, সামরিক লেভেল থেকে দুই দেশের বিদেশমন্ত্রী এমনকি প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর বৈঠক হলেও তা কোনোভাবেই ফলপ্রসূ হচ্ছে না। কারণ শান্তি আলোচনা ফলপ্রসূ হলে চীনের মূল উদ্দেশ্য সাধনে ব্যঘাত ঘটাবে।

এই পরিস্থিতিতে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে ভারতকে এগোতে হবে এবং সমস্ত রকম সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায়সেনা এবং সামরিক বাহিনীর সমস্ত ঘাটতি যতটা সম্ভব পূরণ করতে হবে।আমার দৃঢ় বিশ্বাস সেই লক্ষ্যে সেনা এবং দেশের সরকার সব রকম ব্যবস্থা নিচ্ছে।

যেহেতু চীনের লক্ষ্য ভারতকে লজ্জাজনকভাবে পরাস্ত করে নিজেকে সুপারপাওয়ার হিসাবে পৃথিবীর বুকে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা, স্বাভাবিকভাবেইএই লক্ষ্য পূরণের জন্য তারা সব রকম ছল-বল-কৌশলের সাহায্য নেবে। এর মোকাবিলা করার জন্য আমাদের বন্ধু দেশগুলোর সঙ্গে জোট বেঁধে লড়াই করতে হবে। আমেরিকা, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, সাউথ কোরিয়া, ইজরায়েল, ভিয়েতনাম, তাইওয়ানের মতো দেশের আমাদের সঙ্গে থাকাটা আমাদের বড় ভরসার জায়গা।। বর্তমানে ভারত, আমেরিকা, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া মিলে একটি সামরিক চতুষ্কোণ সৃষ্টিও এশিয়ায় ক্ষমতার বিন্যাসে নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আমার বিশ্বাস। তবে আমাদের বাইরের লড়াইয়ের প্রস্তুতির সঙ্গে দেশের অভ্যন্তরেও কড়া নজরদারি প্রয়োজন। কারণ আমাদের শত্রু শুধু বাইরে নয়, ঘরেও।

এশিয়া এবং পৃথিবীর বুকে চীনের ভূমিমাফিয়াগিরি তথা সাম্রাজ্যবাদী দাদাগিরি বন্ধ করার এবং তাদের সক্রিয় প্রশ্রয়ে পাকিস্তান ও উঃ কোরিয়ার মতো রোগ স্টেটের আস্ফালন বন্ধ করার জন্য এই যুদ্ধ আমাদের জিততেই হবে। দেশের সব মানুষ মিলে জিততে হবে। এই হোক আমাদের শপথ।

Related posts

পশুখাদ্যে পুরস্কৃত বাংলার এক কারখানা

E Zero Point

উচ্চাকাঙ্ক্ষী জেলা কালেক্টরেটদের জন্য মহামারীর সময় সুপ্রশাসনের ওপর আয়োজিত একটি কর্মশালায় বক্তব্য রাখবেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ডঃ জিতেন্দ্র সিং

E Zero Point

জম্মু-কাশ্মীর, গিলগিট-বাল্টিস্তান, মুজফ্ফরাবাদ এবং হিমাচল প্রদেশের বিভিন্ন জায়গায় আগামীকাল ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা

E Zero Point

মতামত দিন