26/04/2024 : 9:36 AM
ই-ম্যাগাজিনসাহিত্য

e-জিরো পয়েন্ট – জ্যৈষ্ঠ ১৪২৭ (রবীন্দ্র-নজরুল সংখ্যা)

কবিতা

আহ্বানে কবি

✒কেতকী মির্জা

উড়ে গেছে পাল ভেঙে গেছে হাল !
মাঝি আজ দিশেহারা ।
কোথা সেই বীর,
এসো মহীয়ান !
নদী আজ গতিহারা ।।
একই বৃন্তে দুটি ফুল ;
আজ রক্তাক্ত নিষ্পষণে ! মণিহারা ফণী হলো নয়নমণি ;
বিষের বাঁশরী প্রাণে ।।
ভাতৃত্বের অনুভূতিতে
ক্ষয়রোগ বাসা বাঁধে
শিরায় শিরায় ।
অন্ধকারে ক্ষয়িষ্ণু পাঁজর প্রজ্জ্বলিত নীলাভ আগুন আকণ্ঠ তৃষ্ণায় ।।
সোনার পালঙ্কে শুয়ে স্বৈরাচারী সাপলুডো খেলে জ্বালিয়ে আগুন বিধ্বংসী ।
ক্ষুধার্ত কবি মুখে নাই কথা ! বুকে চেপে ব্যথা,
ঘরে ফেরে সন্ন্যাসী ।।
দূর্বার কবি বজ্রকলম তলোয়ারে দূর করো যত বিদ্বেষ ।
এসো হে বাদশাজাদা
আরবী ঘোড়ায় উড়িয়ে ধূলো , যেথা হিংসা পথের শেষ ।
চিত্তভরা নিজ মনোভূমির কারাগারে ,
বন্দী যারা স্বজনহারার!
ভেঙে ফেল সব উড়িয়ে ধ্বজা,
আঁধার মনের লৌহকপাট,
যত সব বন্দীশালার।
নজরুল তুমি আবারও এসো ফিরে ,
এই বাংলার ধানসিঁড়িটির তীরে ।
কবি চেয়ে দেখো তুমি আকাশের পানে,
পরিযায়ী গেছে ফিরে,
শান্তির সন্ধানে আপন নীড়ে।
আর আসে না , তারা তালাওয়ের জল খেতে।
ওগো প্রিয় কবি এসো ফিরে , এসো মান ভাঙাতে বাঁশি হাতে।
বাগিচায় ফুল শাখাতে ;
আসে না দোল খেতে সকালের সেই বুলবুল !
সিন্ধু সেঁচে মুক্ত নিয়ে ,
দূর্বার দামাল জ্যৈষ্ঠেরই ঝড়ে,
ফিরেএসো গো কবি নজরুল।
এসো এসো গো তরুন কবি নজরুল ।।♥

Related posts

দৈনিক কবিতাঃ মেঘলাযাপন

E Zero Point

দৈনিক কবিতাঃ অয়নের আত্মকথা

E Zero Point

দৈনিক কবিতাঃ স্বপন-প্রহর

E Zero Point

1 টি মন্তব্য

রজত ঘোষ May 24, 2020 at 8:45 am

নববর্ষ সংখ্যার পর প্রকাশিত হয়েছে জিরো পয়েন্ট এর মাসিক জৈষ্ঠ্য সংখ্যা “রবীন্দ্র নজরুল সংখ্যা”।
লক ডাউন মাঝে মানুষ যখন গৃহবন্দি তখন রবীন্দ্র নজরুল কে স্মরণ করে জিরো পয়েন্ট এর এই প্রয়াস অতুলনীয়। এই মহান দুই মনীষী দের সম্মান জানানোর পাশাপাশি আমরা এই সংখ্যায় পেলাম অসাধারণ সব সাহিত্য বুনন।

বিশিষ্ট কবি ও বাচিক শিল্পী আরণ্যক বসুর কবিতা সমালোচনা করার মতো ধৃষ্টতা আমার নেই। তাঁর কবিতা মানেই ‘spontaneous overflow of powerful feelings’। ”বৃন্তের দুটি ফুলে” কবিতাটিও ব্যতিক্রম নয়। রবীন্দ্র নজরুল এর পটভূমিকায় তিনি বলেছেন ‘সম্প্রীতি সম্প্রীতি রাখে শান্ত-নিরুদ্বেগ’ ।

শম্পা গাঙ্গুলি ঘোষ এর কবিতা “প্রণমি তোমারে” তে কবিমন রবীন্দ্রময় দৈনন্দিন জীবনের কথা বলেছেন। রবীন্দ্রনাথের ‘আনন্দময় প্রকাশ’ ‘চিরস্থায়ী’ কবির ‘এ হৃদয় মাঝারে’। আঞ্জু মনোয়ারা আনসারী র কবিতা “প্রেম শাশ্বত” তে পাওয়ার অফ আর্ট এর কথা বলা হয়েছে। মানব জীবনের সমস্যাময় পথে বহু বাধা আসবেই। তবু কবির কাছে
‘চির শাশ্বত কবির অমৃত বাণী’ ‘জন্ম জন্মান্তরের তপস্যা ধন’। সৃষ্টি ও স্রষ্টা এই কবিতায় প্রেমময় ঈশ্বর।

তৃতীয় পৃষ্ঠায় শুভাশিস মল্লিক “রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল” শীর্ষক তথ্যপূর্ণ লেখনীতে তাঁদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক সম্পর্কে জানা যায়। বদ্রিনাথ পালের লেখা “এক বৃন্তের ফুল” এ অবিনশ্বর রবি-নজরুল কীর্তির জয়গান গেয়েছেন। ” তোমারই খোঁজে” কবিতায় দিকভ্রান্ত কবি ‘জীবনের জয়গান শোনে তোমার থানে বসে।’

কবিরুল এর ছোটগল্প “চন্ডালিকা” অসাধারণ। বর্তমান সময়ের পটভূমিকায় সমাজের নানান বিষয় খুব সুক্ষ চালে তুলে ধরেছেন তিনি। আজকের সমাজে মনিকার খুব দরকার। গল্প টি পড়তে পড়তে ডিলন টমাস এর “A Refusal to Mourn the Death” কবিতাটির কথা মনে পড়লো। আর এই গল্পের মাধ্যমে লেখক সমাজ সচেতনতার পাঠ দিতে ‘reverse psychology’ ব্যবহার করেছেন বলে মনে হয়।

“আহ্বানে কবি” তে কবি কেতকী মির্জার মননে বিদ্রোহী কবি নজরুলকে ফিরে আসার আর্তি ধরা পড়েছে: ‘ফিরে এসো গো কবি নজরুল/এসো এসো গো তরুন কবি নজরুল’। ডঃ রমলা মুখার্জি র প্রবন্ধ “পত্রিকা সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ” এর বিবরণ পাওয়া যায়। মিরাজুল সেখ “স্মরণে রবীন্দ্রনাথ” ও মুস্তারি বেগমের “অবেলার কবি” কবিতাদুটিতে চিরদার্শনিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জয়গান করেছেন।
বাংলা তথা বাঙালির ‘দমবন্ধ বাতাসে কালবৈশাখী’ হলেন কবিগুরু।

“কবিগুরু কে নিয়ে আমার ভাবনা” যে অসীমা সরকার কবিগুরু কে নিয়ে নানান ভাবনা তুলে ধরেছেন। ‘হিরকখন্ড’ উজ্জ্বল রবি সম্পর্কে তিনি লিখেছেন: “অমৃতলোকে থাকো তুমি, হয়ে চির-ভাস্বর,/আমরা সদাই গাহিবো তোমার প্রেমগাঁথা নিরন্তর।” হাস্নে আরা বেগম “চিরনমস্য” কবিতায় বর্তমান সময়ে নজরুল এর অভাব লক্ষ্য করেছেন। তিনি মনে করেন আজকে নজরুল থাকলে ‘বুঝতো সবাই বিদ্রোহ কাকে বলে?’

দেবপ্রিয়া বারিক এর “রঙের রবীন্দ্রনাথ ” এ চিত্রশিল্পী কবিগুরু কে পাওয়া গেলো এবং সঙ্গে বেশ কয়েকটি ছবি। রতন নস্করের “রবিঠাকুর রবিঠাকুর” ও মঞ্জুশ্রী মন্ডলের “বিদ্রোহী কবি” নামক কবিতা দুটিতে যথাক্রমে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও নজরুল ইসলাম কে সম্মান জানিয়েছেন। “রবীন্দ্র সাহিত্য ও সমাজচেতনা” ই অগ্নিমিত্র রবীন্দ্র সমাজ ভাবনার দিকটি তুলে ধরেছেন। লক ডাউন এর সময় বন্দি জীবনে ‘তোমার (রবীন্দ্র)বাণী, তোমার (রবীন্দ্র) চিন্তায়/গানে গল্পে কবিতায়, দিন কেটে যায়’ বলেছেন কবি বর্ণালী শেঠ তার “আর্জি” কবিতায়। কবি শিলাবৃষ্টি র “সাম্যবাদী” কবিতায় বিদ্রোহী কবি “নজরুল ভারতের প্রতি প্রান্তরে তুমি চির-বিদ্রোহী বীর !” শেষ পাতায় স্থান পেয়েছে অসাধারণ আবৃতিমালা ও পাণ্ডুলিপির ছবি। সব মিলিয়ে খুব সুন্দর লাগলো জৈষ্ঠ্য ১৪২৭ সংখ্যা।
…রজত ঘোষ, বালিন্দর, কালনা, পূর্ব বর্ধমান।

উত্তর

মতামত দিন