19/04/2024 : 9:10 AM
ই-ম্যাগাজিনসাহিত্য

e-জিরো পয়েন্ট – আষাঢ় ১৪২৭ (আষাঢ়ে ভূতের  আড্ডা)

রহস্য অণুগল্প


বনমালী

✒ফাল্গুনী দে

টেলিফোন পেয়েই স্বর্গ থেকে ব্যোমকেশ নেমে এলেন শান্তিনিকেতনে। নোবেল চুরির অনুসন্ধান নয়; এক মায়াবৃক্ষের রহস্য উন্মোচনে। নন্দনকাননে নেই এমন গাছ পৃথিবীতে কোত্থেকে এলো? তিনি নিজেও খানিকটা অবাক কিন্তু সংযত। পরদিন সাতসকালে বাগানের মালী ভানু সিং-এর সাথে বেরোলেন প্রাতভ্রমণে। আলো-আঁধারি সেই চরাচর লক্ষ কোটি জোনাকি আবৃত। সামনে এসে দাঁড়ালেন। অনুভবের সাতটি রঙ সাতটি ফুলে বর্ণময় এক বোধিবৃক্ষ — যেন ইন্দ্রধনু। একটিকে স্পর্শ করতেই দেহমনে প্রেম জেগে ওঠে; অন্যটির দিকে তাকালে যেন পূজার অঞ্জলি; পাশেই পান্না রঙা ঋতু-প্রকৃতি; আরেকটি ওই নিচে — বিচিত্র তার প্রকাশ; ওপাশে স্বদেশের গরিমা চুঁইয়ে পড়ছে; গোড়ায় আনুষ্ঠানিকতার আয়োজন; শেষেরটি অস্ফুটে সবার পেছনে। আচমকা, হাওয়ার দোলায় ফুলগুলি সুরে সুরে বেজে উঠলো। গোয়েন্দা হতবাক। ভানুকে দিলেন মাটি খোঁড়ার নির্দেশ। উঠে এলো জলজ্যান্ত পাণ্ডুলিপি গীতবিতান। গোয়েন্দা আপ্লুত। মালী ভাবলেশহীন। বললে – “ও তুই নিয়ে যা, আমি মরে গেলে এর অপব্যবহার হবে।”♦


কবিতা


ভুতের বিয়ে

✒ আব্দুল হিল শেখ
জোজো ভুতের বিয়ে লেগেছে ঘেঁচো ভুতের সঙ্গে,
ভুত পরিবার নাচছে খুব খুশিতে ও রঙ্গে।
বিয়ের দিন ঠিক হয়েছে অমাবস্যার সনে,
খুশির তাড়ায় নাচছে বর, হাসছে বসে কনে।
হাজার ভুতের নেমন্তন্ন হাজার বরযাত্রী,
বরপক্ষ এসে হাজির বারোটা তখন রাত্রি।
বিয়ের সময় জোজো চেপেছে ঘেঁচোর পিটটাতে,
বিয়ে পড়াচ্ছেন ঘেঁচোর বাবা কঙ্কাল নিয়ে হাতে।
বিয়ের পর মাতলো সবাই ভোজের থালা নিয়ে,
খাচ্ছে কাদা, খাচ্ছে মাটি পাঁকের জল দিয়ে।
আরো খাচ্ছে ছেঁড়া ন্যাতা নর্দমার জলে ডুবিয়ে,
এতো গেলো নাস্তা পর্ব, আরো আছে চুবিয়ে।
খাওয়াদাওয়ার মূল পর্ব শুরু হলো ঠিক পরে,
জোজো ও ঘেঁচো খাচ্ছে সাথে মারামারি করে।
বরযাত্রী বসলো খেতে হাড় বাঁধা আসনে,
খাচ্ছে তারা মজা করে আঠা মাখা বাসনে।
পাতে আছে চারটে ঘুটে তাতে লেখা শাদি,
সবজি আছে ছাগলের পঁচা গলা লাদি।
মাংস বলতে আছে অনেক মরা মানুষের মাথা,
ঝোল আছে আঁশটে পানি, নেইকো খেতে বাধা।
শেষে দিলো মিষ্টি বড়ো ঘোড়ার মলের মতো,
খেয়ে যাচ্ছে খেয়ে যাচ্ছে দিয়ে যাচ্ছে যত।
পাঁপড় দিলো বড়ো বড়ো ভাজা কচুর পাতা,
চাটনি দিলো গিলা গোবর রংটা কালো কাদা।
খাওয়াদাওয়া শেষ হলো উঠলো পাত ছেড়ে,
হু-হু-হা-হা শব্দ করে গালে চড় মেরে।
জোজো রেডি যাবে বাড়ি দেখতে শ্বশুরকে,
মাথায় গাঁথা বেলের কাঁটা আলকাতরা মেখে।
ঘেঁচোর মাথায় চললো জোজো মারতে মারতে টাকে,
ঘেঁচোও সুযোগ পেয়ে লাথায় বারে বারে তাকে।
এখন তারা সুখেই আছে থাকুক তারা সুখে,
আমার পদ্য শেষ হলো তালা দিলাম মুখে।♦
◆এই সংখ্যাটি সম্পর্কে আপনার মন্তব্য করুন নীচের কমেন্ট বক্সে।◆

Related posts

দৈনিক কবিতাঃ শঙ্খ ঘোষ – কমলেশ মন্ডল

E Zero Point

দৈনিক কবিতাঃ দেশপ্রেমিক ক্ষুদিরাম

E Zero Point

বর্ষপূর্তিতে মেতে উঠল ‘খোলা জানালা’

E Zero Point

1 টি মন্তব্য

আব্দুল হিল শেখ June 21, 2020 at 8:05 am

অসাধারণ লাগলো। ভালো থাকবেন সকলে।

উত্তর

মতামত দিন