শুভেচ্ছাবার্তা
পবিত্র জাতীয় শিক্ষক দিবসে আমার শ্রদ্ধার্ঘ্য
মনোময় ঘোষ
শিক্ষা ও দীক্ষা দানে নিযুক্ত প্রতিটি মানুষই শ্রদ্ধার ব্যক্তি। তাদের সবাইকে আমি আমার হৃদয়ের শ্রদ্ধা জানাই। শিক্ষাহীনতায় এখনও বহু মানুষ ভয়ানক তমশাময় জগতে পড়ে আছে। তাই সূর্যালোকের মতন, শিক্ষা যেন সর্বত্রগামী হয়ে সমগ্র মানুষের কাছে ধাবিত হয়।
আমাদের দেশের এক মহান ব্যক্তি, সম্প্রতি প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি শ্রী প্রণব মুখার্জী তার কর্মজীবনের শুরু করেছিলেন একজন শিক্ষাবিদ রূপে। তাকে আমার হৃদয়ের শ্রদ্ধা জানাই।
শিক্ষার সঙ্গে অর্থের রসায়ন করা মুর্খতা ও অযৌক্তিক। এটি আমাদের দেশে খুবই প্রকট। বহু ধনী দেশ আছে, যেখানে মানুষজন আর্থিক সঙ্গতির কারনে অনায়াসে দু-তিন পুরুষ পায়ের উপর পা তুলে কাটিয়ে দিতে পারেন, কিন্তু তারা সকলেই বিদ্যার্জনে ব্যাকুল হন।
এদেশে শিক্ষাকে যেন কেবলমাত্র উচ্চ বর্ণের ও রাজন্যদের পাওয়ার অধিকার রাখা হয়েছিল, যেটি কালস্রোতে বিলীন হতে গিয়েও যেন ফিরে আসতে চাইছে। মহাভারতের কাহিনীতে সেই একলব্যের কথা একবার ভাবুন- রাজপুত্রের যুদ্ধবিদ্যা নকল করার (শেখার) অপরাধে বেচারার একটা কাজের আঙ্গুল কেটে নেওয়া হয়েছিল।
আবার লক্ষ্য করুন, মৌর্য্যচন্দ্র গুপ্ত যৌবন কালে গ্রীক নৃপতি সেনা ব্যারাকের প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত যুদ্ধবিদ্যার খুঁটিনাটি অধ্যায়ন করে চলেছেন, সেটা জানতে পেরে নৃপতি তাকে চরম শাস্তির বদলে পরম প্রশস্তি দিয়েছিলেন।
উপরোক্ত উদাহরণ দুটির একটি শিক্ষা বিস্তারে হীনমন্যতার অন্যটি উদারতার পরিচায়ক।
অন্যান্য প্রাণীকুলের মধ্যেও তাদের সন্তানদিগকে কি ভাবে জীবনযুদ্ধে টিকে থাকতে হবে, সে ব্যাপারে শিক্ষাদানের একটা প্রবণতা দেখা যায়ষ কোনও কারণে ঐসব সন্তানরা অভিভাবকহীন হয়ে গেলে, তাদের নিশ্চিৎ মৃত্যুবরণ ছাড়া উপায় থাকে না।
আমার কর্ম-জীবনের শুরুতে আমি গৃহ শিক্ষকের কাজে বহাল হয়েছিলাম। গুরু হিসাবে সেই গুরুদায়িত্ব যথাযথ নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করি। আমার ছাত্রছাত্রীরা সকলেই পরবর্তী কালে নিজেদের সুপ্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে।
সকলকে আমার শ্রদ্ধা ও শুভেচ্ছা জানিয়ে, এখানেই ইতি টানলাম।♦